বিগত দুই বছরে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামশা,চারিগ্রাম ও চান্দহর ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে প্রায় শতাধিক বাড়ি-ঘর,ব্যবসার প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি কালিগঙ্গা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।চলতি বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানি কমতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই ওইসব এলাকায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ নদী ভাঙ্গন।এতে ঝুঁকিতে পড়েছে উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক ঘর-বাড়ি।
সরেজমিন রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দেখা গেছে,জামশা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মাটিকাটা মধ্যপাড়া জামে মসজিদসহ আশেপাশের বসত বাড়ি,চারিগ্রাম ইউনিয়নের বড়াটিয়া বাজার এলাকা এবং চান্দহর ইউনিয়নের বার্তা গ্রামের লোকজন নদী ভাঙ্গনের মারাত্বক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।ইতিমধ্যে জামশার মধ্যপাড়া জামে মসজিদের একাংশ কালিগঙ্গায় গ্রাস করে নিয়েছে।ভাঙ্গনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ মসজিদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে এবং আশেপাশের প্রায় ৩০টি বসত বাড়িও ভাঙ্গনের কবলে পড়বে।
জানা যায়,চলতি বর্ষায় নদী ভাঙন রোধে জামশা ইউনিয়নের বালুরচর এলাকা ও মাটিকাটা বাজারের কিছু অংশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে কিছু বালুর বস্তা ফেলা হলেও মধ্যপাড়া জামে মসজিদ এলাকা ভাঙ্গন রোধে নেয়া হয়নি কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।যার কারণে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে এ অংশে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।এখন ভাঙ্গনের আতংকে নদী তীরবর্তী অংশের লোকজন নির্ঘুম রাত যাপন করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ আব্দুল আলীম জানান,কালীগঙ্গার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে।গত কয়েকদিনে ভাঙনে বেশ কয়েকজনের বসতবাড়ি,ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।হুমকিতে রয়েছে অনেক বসতবাড়ি, আবাদি জমি ও ফলজ-বনজ গাছপালা।নদী তীরবর্তী বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেওয়ায় আমাদের গ্রামের মানুষের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।যে কোন সময় রাক্ষসী কালীগঙ্গা আমার বসত বাড়ি গিলে খেতে পারে।এখনই কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নিলে পৈত্রিক ভিটা বাড়ি হারিয়ে পথের ফকির হয়ে পড়ার উপক্রম হবে।
জামশা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মিজানুর রহমান মিঠু বলেন,মধ্যপাড়া জামে মসজিদের ভাঙ্গন এলাকার বিষয়ে আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।খুব দ্রুতই তারা ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।চারিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাজেদুল আলম স্বাধীন বলেন,বড়াটিয়ার ভাঙ্গন এলাকায় কিছু বালুর বস্তা ফেলা হয়েছে।আরো কিছু ফেললে হয়তো ভাঙ্গন ঠেকানো যাবে।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাঈনউদ্দিন বলেন,আমাদের বড় একটি প্রজেক্ট সংশোধন করে পাঠানো হয়েছে।পাশ হলে ভাঙ্গন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে।