হবিগঞ্জ শহরের অনন্তপুরে মাহমুদা খানম (২৩) নামের দুই সন্তানের এক জননীর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।মৃতের পরিবারের দাবি যৌতুকের টাকা না পেয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে তার স্বামীর পরিবার।তবে ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক থাকায় রহস্য আরও ঘর্নীভূত হচ্ছে।গত ৭ অক্টোবর রাতে হবিগঞ্জ শহরের অনন্তপুরে এ ঘটনা ঘটে।মৃত মাহমুদা ওই এলাকার মাকসুদ মিয়ার স্ত্রী।
জানা যায়,প্রায় দুই তিন বছর আগে লাখাই উপজেলার ভাদিকারা গ্রামের হাজী আব্দুল বাছির মিয়ার কন্যা মাহমুদাকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে শহরের অনন্তপুরের হাজী নুর মিয়ার পুত্র মাকসুদ।বিয়ের কিছুদিন তাদের সংসার জীবন ভালো চলে এবং আড়াই বছরের এক পুত্র সন্তানের জন্ম হয়।সম্প্রতি মাকসুদ জানতে পারে তার শশুর তার বড় দুই মেয়ের জামাতাকে বিয়ের সময় উপহার হিসেবে লাইটেস ও প্রাইভেটকার দিয়েছেন।
এরপর থেকে সে মাহমুদার কাছে তার পিত্রালয় থেকে ১০ লাখ টাকা এনে দিতে চাপ দেয়।এনিয়ে তাদের মাঝে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হত।টাকা এনে না দিলে তাকে মারধোর করতো মাকসুদ।নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বেশ কয়েকবার মাহমুদা পিত্রালয়ে গিয়ে ফিরে আসেনি।মাকসুদের পরিবার মুরুব্বিদের মাধ্যমে পুনরায় নিয়ে আসে।সবশেষ আবারও মাহমুদাকে টাকার জন্য আবারও চাপ দিলে সে পিত্রালয়ে চলে যায়।
পরে রিচি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইলিয়াছ মিয়ার মাধ্যমে বিচার শালিস করে আবারও অনন্তপুরের বাসায় নিয়ে আসা হয়।সম্প্রতি মাহমুদা অন্তসত্তা হয় এবং গত ৩ অক্টোবর তার ছোটবোনের বিয়ে উপলক্ষে পিত্রালয় যায়।৪ অক্টোবর বিয়ের দিন তার প্রসব ব্যথা শুরু হলে মাকসুদ তাকে অনন্তপুরে বাসায় নিয়ে আসে এবং নরমাল ডেলিভারিতে মাহমুদা পুত্র সন্তান প্রসব করে।
গত ৭ অক্টোবর রাতে তার শশুর,শাশুড়ি মাহমুদা সদ্য ভূমিষ্ট হওয়া ছেলের জন্মদিনে উপহার পাওয়া ৩ হাজার টাকা দিতে বলে।মাহমুদা দিতে আপত্তি করে।এ ঘটনা আবারও শুরু হয় মাকসুদ ও তার পরিবারের সাথে মাহমুদার ঝগড়া।ওই দিন রাতে বিষয়টি মাহমুদা তার ছোট ভাই ফয়সলকে কল দিয়ে জানায়।এসময় ফয়সাল ফোনে মাহমুদার কান্নার আওয়াজ শুনতে পায়।এরপর একাধিকবার কল দিলে সে রিসিভ করেনি।
পরে তাদের জানানো হয় মাহমুদা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।ওই দিন রাতেই তারা হাসপাতালে এসে দেখেন মাহমুদা মারা গেছে।তাদের ধারণা মাহমুদাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।বিষয়টি সদর থানায় জানালে এস আই উৎসব কর্মকার হাসপাতালে গিয়ে লাশের সুরতহাল করেন এবং ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করেন।ঘটনার পর মাকসুদ পলাতক রয়েছে।এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
সদর থানার ওসি (তদন্ত) দৌস মোহাম্মদ জানান,লাশের সুরতহাল করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।ময়না তদন্ত প্রতিবেদন এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।