ইউরোপের দেশ গ্রিসে গত ১০ দিন ধরে খোঁজ মিলছে না মোঃ ওয়াহিদ আলী নামের এক রেমিট্যান্স যোদ্ধার। তার পরিবার ও গ্রিসে থাকা স্বজনদের অভিযোগ অর্থ আত্মসাতের জন্য তাকে গুম করেছে একটি চক্র। তাদের অনেকেই ধারণা করছেন তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ছাড়া জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও আত্মসাতকৃত অর্থ উদ্ধারের জন্য এথেন্সে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নিখোঁজের মামা রমিজ মিয়া। নিখোঁজ ওয়াহিদ আলী হবিগঞ্জ শহরের অনন্তপুর এলাকার সিদ্দিক আলীর পুত্র।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওয়াহিদ দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে গ্রিসে বসবাস করে আসছিলেন। ধরে গ্রিসের লাপ্পায় একটি বাংলাদেশি মুদি দোকানে কর্মরত ছিলেন। দোকানটি পরিচালনা করতেন ইউনুস মিয়া ওরফে লিটন, মোঃ ইদ্রিস, কুদ্দুস মিয়া তারা তিন ভাইসহ তাদের বন্ধু সুলতান আহমেদ ও পলাশ মিয়া। তাদের দোকানে কর্মরত ওয়াহিদ এর সততায় সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের মনে জায়গা করে নেন। তাই বিশ্বাস করে তার মাধ্যমে রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের উপার্জিত অর্থ জমা রাখতেন এবং দেশেও পাঠাতেন।
গেল ঈদুল আযহার আগে তার কাছে প্রায় ৬১ জন বাংলাদেশি প্রায় লক্ষাধীক ইউরো জমা রাখেন। বাংলাদেশের টাকার হিসাবে প্রায় এক কোটি টাকারও বেশি। ওয়াহিদ সেই ইউরোগুলো তার কর্মরত প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ ইদ্রিস, কুদ্দুস মিয়ার নিকট জমা রাখেন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, ওয়াহিদ কর্তৃক জমাকৃত রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের আমানত এর পরিমাণ বেশি দেখে তা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করেন লিটন, ইদ্রিস, কুদ্দুস, সুলতান ও পলাশ মিয়াসহ চক্রটি। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী ওয়াহিদকে হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগ উঠেছে তিন ভাই ও তাদের দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে।
এ তথ্য এখন সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। ওয়াহিদের কর্মস্থল এলাকায় হবিগঞ্জ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও তার স্বজনরা গেলে এমনই বর্ণনা দেন সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশিরা।এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তাৎনিকভাবে অভিযান করে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এরপর এথেন্সের প্লাথিয়া ভাথিসে অবস্থিত দোকানটিও বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যায় লিটন। গোপন একটি সূত্র বলছে, সিমান্ত পাড়ি দিয়ে আলবানীয় পালিয়েছে লিটন। সেখান থেকে বাংলাদেশে যাওয়ার কথা রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে জড়িতদের সনাক্ত করে ওয়াহিদকে উদ্ধার করাসহ আত্মসাৎকারীদের কবল থেকে প্রবাসীদের অর্থ উদ্ধার করে তা ফিরিয়ে দিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও গ্রিক প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন গ্রিসে থাকা ওয়াহিদের স্বজন, এলাকাবাসী ও সচেতন মহল।