স্বামী ও পরিবারের লোকজনের ফেলে রেখে যাওয়া অসহায় গর্ভবতী নারীর পাশে দাড়ালেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা আক্তার। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করালেন। সোমবার স্বর্ণা আক্তার সাথী(২৫) ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। প্রসূতি মা ও পরিবারের সকলেই খুশি হয়েছেন। ইউএনও সোমবার মা ও শিশুর জন্য উপহার সামগ্রী নিয়ে দেখতে যান, তাদের সুস্থতা এবং সুখী দাম্পত্ত জীবন কামনা করেন।
স্বর্ণা আক্তার সাথী জানান, সদর উপজেলার মেদনী গ্রামে তার স্বামীর বাড়ি। স্বামীর নাম সুমন মিয়া। তাদের ১০ বছরের দাম্পত্ত জীবনে আরও দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। আবারও গর্ভবতী হয়ে সন্তান প্রসবের সময় হলে গত ক’দিন ধরে তাকে নিয়ে সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ঘুরাফেরা করেও অপারেশনের ব্যবস্থা হচ্ছিল না। এতে স্বামী ও পরিবারের লোকজন রাগান্বিত হয়ে তাকে গত দুইদিন আগে নেওয়া হয় জেলা শহরের কাচারী রোডে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সামনে। সেখানে স্বামী ও পরিবারের লোকজন তাকে রেখে চলে যায়। খবর পেয়ে সদর ইউএনও মাহমুদা আক্তার সেখানে হাজির হন এবং তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠান। সমাজ সেবা বিভাগকে ওষুধের ব্যবস্থা করার কথা বলেন। সদর হাসপাতালের ডাক্তার করোনা আক্রান্ত থাকায় সেখানে অপারেশন করা সম্ভব নয়। মডেল থানা পুলিশকে বিষয়টি দেখার জন্য স্বামীর বাড়িতে খোঁজ নেওয়ার কথা বলেন। এরই মধ্যে অজ্ঞাত কয়েকজন তাকে জেলা শহরের কাচারী রোডে বেসরকারি আল নূর ডায়গনস্টিক হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে ভর্তি করে। পরে স্বামী ও পরিবারের লোকজন তার খোঁজ নেয়। গতকাল সোমবার সকালে অপারেশনে তার ছেলে সন্তানের জন্ম হয়।
নেত্রকোনা সদর ইউএনও মাহমুদা আক্তার জানান, গত শনিবার সাতপাই স্টেডিয়াম মাঠে যাওয়ার পথে কাচারী রোডে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সামনে গর্ভবতী নারীকে অসহায় অবস্থায় দাড়িয়ে থাকতে দেখতে পান। পরে তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠান। সদর হাসপাতালের ডাক্তার করোনায় আক্রান্ত থাকায় ওই নারীকে কয়েকজন আল নূর ডায়গনস্টিক হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। আল নূর ডায়গনস্টিক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাকসুদুল ইসলাম জানান, মা ও তার সন্তান সুস্থ্য আছে। তাদের ভাল থাকার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।