রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে গাছ কাটার কারণে প্রায় অর্ধশতাধিক পাখির মৃত্যর ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
সেভ দ্য ন্যাচার অ্যান্ড লাইফ, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), এলিজাবল ইয়ুথ ফর ইভোলিউশন (আই), বাংলাদেশ জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ফেডারেশন, জীববৈচিত্র সংরক্ষণ জোট, ইয়্যুথ অ্যাকশন ফর সোশ্যাল চেঞ্জ (ইয়্যাস), নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনসহ পরিবেশবাদীসহ আরও কয়েকটি সংগঠন এর আয়োজন করে।
বাপার জেলা সভাপতি ও রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, একটি বসতি উচ্ছেদের জন্যও দু’এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। পাখিদের সে সময় দেওয়া হয়নি। আর দু’সপ্তাহ হলেই পাখির বাচ্চাগুলো উড়তে শিখতো।
তাদের এমন করুণ মৃত্যু হতো না। এই ন্যাকারজনক ঘটনায় জড়িত সবার বিচার দাবি করে তাঁরা বলেন, একটু অক্সিজেনের কত মূল্য তা এই করোনাকালে আমরা বুঝতে পারছি। সেই অক্সিজেনের ভান্ডার গাছ কাটা হচ্ছে নির্বিচারে। সেখানেও নির্বিচারে পাখিদেরও মৃত্যু হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। বৃক্ষনিধন করে আমরা কোন উন্নয়ন চাই না।
সেভ দ্য নেচারের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের জেলার সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী পিয়ারা, জীববৈচিত্র সংরক্ষণ জোটের আহ্বায়ক ডা. মাহফুজুর রহমান রাজ, গ্রীন ভয়েসের আহ্বায়ক আবদুর রহিম, ক্ষেতলাল পাখি কলোনীর সভাপতি মহাসিনা বেগম, নারীনেত্রী সেলিনা বেগম, আই’র সভাপতি গোলাম নবী রনি, দিনের আলো হিজড়া সংঘের সভাপতি মোহনা, জনসেবায় ভয়েস অব ইয়ুথের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান, ইয়্যাসের নেতা শামীউল আলীম শাওন প্রমুখ।
উল্লেখ্য গত শনিবার রামেক হাসপাতালের সামনে ড্রেন নির্মাণের জন্য একটি অর্জুন গাছ কাটা হয়। এতে গাছ থেকে পড়ে যায় শামুকখোল পাখির প্রায় অর্ধশতাধিক বাচ্চা। এতে বেশিরভাগ বাচ্চা সঙ্গে সঙ্গে মারা যায়। যেগুলো বেঁচে ছিল, সেগুলো মাংস খাওয়ার জন্য জবাই করে নিয়ে যান নির্মাণ শ্রমিক এবং রোগীর স্বজনেরা। এর প্রতিবাদেই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এদিকে রামেক হাসপাতালের পাখির মৃত্যু নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তুমুল সমালোচনা শুরু হওয়ার পর রোববার বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা গাছ না কাটা ও পাখিদের আবাসস্থলের ক্ষতি না করার জন্য রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি দিয়েছেন। এছাড়া বিষয়টি লিখিত আকারে মন্ত্রণালয়কেও অবহিত করা হয়েছে বলে জানান।