রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে দূর্নীতি অনিয়ম ও স্কুলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে উপজেলা শিক্ষা অফিসার তদন্ত শুরু করেছেন।তদন্ত অনুযায়ী তিনি ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কোনো সম্পত্তির টেন্ডারের টাকার কোন হিসাব দিতে পারেন নাই বা স্কুলের ব্যাংক একাউন্টে কোন টাকা জমা রাখেন নাই।
সরেজমিনে জানা যায়,বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নিজ নামে প্রায় ৪৬ বিঘা জমি রয়েছে।যাহা বর্তমান প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন অদ্যবধি পর্যন্ত সম্পত্তির টেন্ডারের টাকার কোন হিসাব কাউকে দেন না।কোন কমিটি বা ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় শিক্ষকেরা স্কুলের জমির টাকার হিসাব চাইলে।তাদেরকে মামলার ভয় দেখায়,চাকরীচ্যুত করবো বলে বার বার শোকজ করে দেন তিনি।
প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন ১৯৯৫ সালে বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কম্পিউটার সার্টিফিকেট কিনে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।অনেক অর্থ খরচ করে তিনি সেই অভিযান থেকে বেঁচে যান এবং ধামাচাপা পড়ে যায়।এরপর ইংরাজী ১৯১৩ সালের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকে স্কুলের ৪৬ বিঘা সম্পত্তির টেন্ডারের টাকা পয়সা ও হিসাব-নিকাশ কাউকে না দিয়ে স্কুল ব্যাংকের একাউন্টে জমা না রেখ তিনি নিজের খেয়াল-খুশি মতো নিজেই অর্থ আত্মসাৎ করেন।
স্কুলের অর্থ আত্মসাতের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালে স্কুল কমিটিসহ ১১ জন শিক্ষক বাদী হয়ে উপ-পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা রাজশাহী অঞ্চল বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ও সদয় অবগতির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা।চেয়ারম্যান মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহী,জেলা প্রশাসক রাজশাহী।
উপ-পরিচালক সমন্বিত জেলা কার্যালয় দুর্নীতি দমন কমিশন রাজশাহী,জেলা শিক্ষা অফিসার রাজশাহী।চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদ,উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং সভাপতি বখতিয়ার পুর উচ্চবিদ্যালয় বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে প্রেরণ করা হয়।
এরপর এলাকার সচেতন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বাদী হয়ে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১৫ তারিখে এক বছরের স্কুলের জমি টেন্ডারের ১২ লক্ষ ২৬ হাজার ৫৪৪ টাকার হিসেব না দিতে পারায় মহাপরিচালক দুর্নীতি দমন কমিশন সেগুনবাগিচা ঢাকা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।কিন্তু ক্ষমতাশালী দলের স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় সকল অভিযোগ ধামাচাপা পড়ে যায়।
স্কুলে কমিটি ও ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় স্কুলের সকল শিক্ষক ২০২১ সালের জুলাই মাসের ১১ তারিখে ২০১৯- ২০ ও ২১ সালের অর্থাৎ ৩ বছরের স্কুলের সম্পত্তির টেন্ডারের টাকার হিসাব চাইলে,হিসাব না দিয়ে উল্টো করোনাকালীন সময় স্কুল ছুটি থাকা সত্বেও তিন দিনের অনুপস্থিত দেখিয়ে অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ১১ জন শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক শোকজ করেন।তার পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জন শিক্ষক বাদী হয়ে আগস্ট মাসের ১১ তারিখে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এব্যাপারে বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিনের সাথে কথা বলা হলে তিনি অর্থ আত্মসাতের কথাও অস্বীকার করলেও ১১টি শিক্ষককে নোটিশের মাধ্যমে শোকজ করার কথা স্বীকার করেন।এবিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জাহিদুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলা হলে তিনি বলেন,বখতিয়ারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে,সে অভিযোগ সে অভিযোগ গুলোর তদন্ত চলছে।
অভিযোগের বিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,অভিযোগের বিষয়গুলো একজনকে তালিকা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।তালিকা পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীর,বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর দেবাশীষ রঞ্জন রায়ের সাথে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।