কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার নাগাইশ গ্রামের উত্তরপাড়ার নান্টু চন্দ্র দাস নামে এক অসহায় হিন্দু পরিবারের বসতভিটা দখল করে রাতের আধারে একই এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল ঘর নিমাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার ১৫ অক্টোবর মধ্যরাতে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা প্রত্যাহার করার দাবিতে এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করার পর আসামিরা হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাণনাশের হুমকি দুমকি ভয়-ভীতি প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছে। তারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, নান্টু চন্দ্র দাস সে একজন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। তাদের সংখ্যায় কম বিদায়। আমরা এলাকাবাসী তাদেরকে সবসময় দেখাশুন করে আসতাম। তবে নান্টু চন্দ্র দাস সে একজন খারাপ প্রকৃতির মানুষ। সে বিভিন্ন সময় মাদক সেবন করতেন। তার কাছে যখন মাদকের টাকা না থাকতো তখন সে এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা দার করতেন। সেই মাদকের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে তার ১২ শতাংশ জমি বিক্রিয় করে দিয়েছে বলে আমরা জানতে পারি।
অভিযোগের বিবরণী নান্টু দাসের স্ত্রী অঞ্জনা রানী দাস জানান, প্রায় ১০০ বছরের আগে থেকে পূর্বপুরুষদের বসতভিটায় আমরা বসবাস করে আসছি। আমি আমার স্বামী ও সন্তানের নিয়ে বাবার বাড়িতে দুর্গাপূজা উৎসব করতে জায়। হঠাৎ শুক্রবার রাতের আধারে প্রতিবেশী একটি মহল ইদ্রিস ও রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে আমাদের বসতবাড়ির জমি তাদের উল্লেখ করে বেশ কিছু লোকজন নিয়ে একটি টিনের ঘর নিমাণ করেছে বলে আমরা জানতে পারি। শনিবার ভোরে আমিসহ আমার পরিবার বাবার বাড়ি থেকে ঘটনাস্থলে অথাৎ আমার স্বামীর বাড়ি আসি। এসে লোকজন দেখতে পাই।
আমরা তাদেরকে জমি দখল করে ঘর নির্মাণে বাধা প্রদান করি। তারা আমাদের দিকে উত্তেজিত হয়ে আমাদের উপর হামলা চালিয়ে মারধোর করে। তাৎক্ষণিক কোনো উপায় না পেয়ে ৯৯৯-এ কল করি। তখন ব্রাহ্মণপাড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং আমাদেরকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণপাড়া থানায় আটজনকে নামীয় এবং ৮/১০কে অজ্ঞাত নামা আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করে ১৬ অক্টোবর শনিবার। আসামীরা হলেন একই এলাকার মৃত আনদুল রহমানের ছেলে মো: ইদ্রিস, বন্দালীর ছেলে রফিকুল ইসলাম, মৃত আনদুল রহমানের ছেলে মো: কুদ্দুস, ছিদ্দিকুর রহমান, আবুল হাসেমের ছেলে দেলোয়ার হোসেন, রবিউল, হোসেনের ছেলে আলা-আমিন, সাইদুলসহ ৮/১০কে অজ্ঞাত। অভিযুক্ত ইদ্রিস মিয়া বলেন, নান্টু চন্দ্র দাসের কাজ থেকে ৩০ লক্ষ ৩২ হাজার টাকার বিনিময়ে আমি জায়গা ক্রয় করি। সে আমার চার ভাইয়ের নামে জায়গা রেজিস্টার করে দেন। জায়গার দলিল মূলে আমরা ঘর নির্মাণ করি।
স্থানীয় শশীদল ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন মাস্টার বলেন, নান্টু চন্দ্র দাস একই গ্রামের ইদ্রিস এর কাছে জমি বিক্রি করছে তা সত্য। তবে আপনারা যেমন শুনেছেন বিষয়টা তেমন না। রাতের আধারে তাদের বাড়িতে ঘর নির্মাণ ও জমি দখলের বিষয়টি সত্য। ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি সাহেব বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে আমাকে অবগত করেছেন। নান্টুর ছোট ছোট ছেলে মেয়ে রয়েছে তাদের দিকে তাকিয়ে বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসা করার জন্য ওয়ার্ড মেম্বার জাকির হেসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপেল্লা রাজু নাহা বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আমি এবং আমার ঘটনাস্থল সরেজমিনে তদন্ত করি। নান্টু চন্দ্র দাস একজন মাদকাসক্ত।
সে ইঞ্জিনিয়ার ইদ্রিস গংদের নিকট থেকে টাকা এনে জমি বিক্রয় করে দেন এবং জমি রেজিস্টার করেও দিয়ে দেন। এছাড়া নান্টুর সন্তানদের নামের একই জমি দানপত্র মূলে রেজিস্টার করে দেন। বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসা না করা গেলে আদালতে যাওয়ার কথা বলেছি।