উদ্বোধনের ১৫ বছর পার হলেও জনবল অভাবে এখনো চালু হয়নি বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম পৌর শহরে নির্মিত ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল।অত্যাধুনিক হাসপাতাল ভবন,অপারেশন থিয়েটার,চিকিৎসকদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা,চিকিৎসা সরঞ্জাম থাকলেও চালু নেই স্বাস্থ্য সেবা।কবে নাগাত চালু হবে তার সদুত্তর নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে।ফলে বক্সে নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ টাকার চিকিৎসা সরঞ্জাম।চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ।
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্রে জানা যায়,পৌরবাসীকে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দেবার লক্ষ্যে ২০০২ সালে পৌর শহরে একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।সরকারের স্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগ ৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা খরচ করে নির্মাণ করে হাসপাতালটি।ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ শেষে তরিঘড়ি করে জনবল নিয়োগ ছাড়াই ২০০৬ সালের ১৮ অক্টোবর হাসপাতালটির উদ্বোধন করেন সাবেক সংসদ সদস্য ডাঃ জিয়াউল হক মোল্লা।
২০০৮ সালে নন্দীগ্রাম হাসপাতালের জন্য ১৮টি পদ সৃষ্টি করা হয়।এর মধ্যে একজন চিকিৎসা কর্মকর্তা,ছয়জন চিকিৎসক, পাঁচজন নার্স,একজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট,একজন ফার্মাসিস্ট ও একজন ল্যাব সহকারী।কিন্তু দীর্ঘ ১৫ বছরেও নিয়োগ হয়নি পদগুলোর।
স্থানীয়রা জানান,উপজেলা থেকে ১০ কিঃমিঃ দূরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ৪০ কিঃমিঃ দূরে শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল অবস্থিত।২০ শয্যার এই অত্যাধুনিক হাসপাতালটি তাঁদের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসাস্থল হওয়া স্বত্বেও পাচ্ছেন না চিকিৎসা সেবা।
সরজমিন গিয়ে চোখে পরে অবহেলা আর অযত্নে হাসপাতালটির রুগ্নদশা।দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ফাটল ধরেছে ভবনে।কোথাও কোথাও খসে পরেছে পলেস্তারা।নষ্ট হচ্ছে যন্ত্রপাতি,ওটিরুম।বেড গুলোতে জমেছে ময়লার আস্তরণ।হাসপাতাল প্রঙ্গনের জমেছে ময়লা।চুরি ও নষ্ট হয়ে গেছে বৈদ্যুতিক বাতি।নৈশ প্রহরী না থাকায় সন্ধ্যার পর জমে ওঠে মাদকসেবীদের আড্ডা।
একজন মেডিকেল অফিসার,একজন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ও একজন ফার্মাসিস্ট দিয়ে সীমিত পর্যায়ে চলছে বহিঃবিভাগ সেবা।কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডাঃ শান্তা ফ্লোরিন তৃষা জানান,বহিঃবিভাগে প্রতিদিন ৪০-৫০ জন রোগী আসেন চিকিৎসা নিতে।কিন্তু জনবল অভাবে তাঁদের প্রাথমিক সেবা ছাড়া কোন সেবাই দেওয়া সম্ভব হয়না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ তোফাজ্জল হোসেন মন্ডল জানান,জনবল চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বার বার চিঠি দেওয়া হলেও সমস্যার কোন সুরাহা মেলেনি।বগুড়া ৪ আসনের (নন্দীগ্রাম-কাহালু) এমপি মোঃ মোশাররফ হোসেন জানান,চলতি অধিবেশনসহ বেশি কয়েকটি অধিবেশনে জাতীয় সংসদে এ সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে।যা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নোট করেছে।আশারাখি দ্রুত সমস্যাটির সমাধান হবে।