বরগুনা সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকের দ্বায়িত্ব অবহেলায় সোহরাফ গাজী নামের এক অটো চালকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে ইমরান নামের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী মৃত্যু সোহরাফ গাজী সদর উপজেলার ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের গনি মুসুল্লির ছেলে। সোহরাফ দীর্ঘদিন টিবি রোগে ভুগছিল বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সোহরাফ কে ২৬ জানুয়ারি (বুধবার) বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটের সময় অসুস্থ অবস্থায় তার স্বজনরা বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার ভর্তি নিয়ে ডাক্তার ইমরানের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালের নতুন ভবনে রাখেন। ২৭ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) রাত ২টা ৩০ মিনিটের সময় সোহরাফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে মুত্রনালী বন্ধ হয়ে ছটফট করতে করতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পরে। এসময় সোহরাফের সাথে থাকা স্ত্রী ও মা দ্রুত আবাসিক চিকিৎসক ইমরানের কক্ষে ছুটে গিয়ে তার কক্ষ তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান এবং সেবিকাদের কক্ষও ছিল খালি। পরে হাসপাতালের পুরাতন ভবনের জরুরী বিভাগে যেতে চাইলে নতুন ভবনের মুল ফটকেও তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান তারা। অনেক চেষ্টার পরে কোন সাহায্য না পেয়ে রাত ৩টা ৩৫ মিনিটের সময় সোহরাফের ছোট ভাই মোশাররফ হোসেনকে ঘটনার বিষয় মুঠোফোনে অবহিত করলে তিনি বাড়ি থেকে রওয়ানা হয়ে রাত ৪টা নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছে জানতে পারেন ডাক্তার ইমরান ও দ্বায়িত্বরত সেবিকা শাহনাজ পারভীন রাতেই তাদের বাসায় চলে গেছেন। মোশাররফ হোসেন হাসপাতালের গেটে প্রায় ঘন্টা খানেক ডাকাডাকির পরে জনৈক জাকির নামের একজন রোগী গেটের তালা খুলে দেন। এসময় জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তারকে নিয়ে সোহরাফের বেডে গেলে ততক্ষণে সোহরাফ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। পরে সকালে হাসপাতালে এসে ডাক্তার ইমরান সোহরাফের মৃত্যু সনদ প্রদান করেন। সকালে ডাক্তার ইমরানকে দেখেই মৃত্যুের স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে পরেন।
এবিষয়ে ডাক্তার ইমরান মুঠোফোনে তার দ্বায়িত্বে থাকার কথা অস্বীকার করেন। হাসপাতালে না থাকা ও গেট তালাবদ্ধ করার বিষয় কথা বলতে চাইলে তিনি কোন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।
সেবিকা শাহনাজ পারভীন প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েও পরে বলেন, রাতে তিনি একবার ওয়ার্ড ঘুরে তার বাসায় চলে যান। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার না থাকার ভুলেই সোহরাফ গাজীর মৃত্যু হয়েছে। তার গাফিলতির বিষয়টি যেন গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার জন্য তার একজন পরিচিত গণমাধ্যমকর্মীকে দিয়েও অনুরোধ করেন।
বরগুনা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সোহরাব হোসেন বলেন, হাসপাতালে উপস্থিত না থাকাটা ডাক্তারের ভুল ছিল। তবে পরক্ষণেই জনবল সংকটের অযুহাত দেখিয়ে ডাক্তার ইমরানের অপরাধ আড়াল করার চেষ্টা করেন।