খুলনার পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসারের মোবাইল নাম্বার ক্লোন করে প্রতারণার মাধ্যমে বিকাশে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে স্বাস্থ্য বিভাগের এডিশনাল সেক্রেটারী পরিচয় দানকারী এক প্রতারক কে গ্রেপ্তার করেছে পাইকগাছা থানা পুলিশ। পাইকগাছা থানা পুলিশ লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানায় অভিযান চালিয়ে কাকিলা নামক স্থান থেকে আ জ ম সামছুদ্দিন মাসুদ ( ৩৮) কে গ্রেপ্তার করা হয়। সে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার জীবনপুর গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় পাইকগাছা থানায় প্রথমে জিডি ও পরে মামলা হয়েছে।
থানাপুলিশ ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, গত ১৭ জুন পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনী কনসালটেন্ট চিকিৎসক সুজন কুমার সরকারের নিকট স্বাস্থ্য বিভাগের এডিশনাল সেক্রেটারী নাজমুল হক পরিচয় দেয়। প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার মাধ্যমে কৌশলে নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং তার চাকরীর ক্ষতি হবে এই মর্মে হুমকি প্রদান করে তার নিকট ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। তার কথায় ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে দুই ধাপে বিকাশ নাম্বারে ৩৩ হাজার টাকা প্রদান করে। অতঃপর অজ্ঞাত ব্যক্তির নাম্বার বন্ধ থাকায় বুঝতে পারেন তিনি বিকাশ প্রতারনার স্বীকার হয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরী করে। যার নং- ৯৫৭। থানার অফিসার ইনচার্জ এজাজ শফী দিক-নির্দেশনায় তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়।
তদন্তের নাম ঠিকানা প্রমানিত হলে গত ৩ আগষ্ট সুজন কুমার সরকার বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার নাম্বার- ৯,। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপুলিশ পরিদর্শক সুকান্ত কর্মকার, সঙ্গীয় উপপুলিশ পরিদর্শক তাকবীর হোসাইন এবং সহকরী উপপুলিশ পরিদর্শক নাজমুল ইসলাম আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অভিযানে গত শুক্রবার দুপুর ১.৪৫ মিঃ লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ থানার কাকিলা নামক স্থান থেকে তাকে আট করে। রবিবার রাতে আসামীকে লালমনিরহাট থেকে পাইকগাছা থানায় এনে পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সোমবার সকাল পাইকগাছা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হাজির করা হয়। পাইকগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ এজাজ শফী জানান, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়। সম্পূক্ত আলামতসহ লালমনিরহাট জেলা থেকে আসামীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তদন্তকালে আসামীদের সনাক্তপূর্বক পলাতক সিন্ডিকেট সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
তথ্য প্রযুক্তি যুগে কোন সরকারী উর্বতন কর্মকর্তা নিজ পরিচয় দিয়ে কিছু দাবি করলে তা বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করার বিষয়টি অনাকাঙ্খিত। ইতঃপূর্বে এই ধরণের অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশ বেশিরভাগ অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। সামাজিকভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে এই ধরনের অপরাধের মাত্রা কমে যাবে বলে তিনি জানান।