ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান। ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার আসলামপুর ইউনিয়নের বরদার হাট ব্রিজ সংলগ্ন ৬৩ নং আয়শাবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩টি ভবনের বিভিন্ন জয়েন্টে ফাটলসহ পলেস্তারা ধসে পড়েছে। ক্লাসে পাঠদান চলাকালীন সময়েও পলেস্তারা ধসে পড়ে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
এছাড়াও বিদ্যালয়টিতে নেই পর্যাপ্ত বসার বেঞ্চ ও আসবাবপত্র। এ অবস্থার মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়টিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর একাধীকবার পরিদর্শন করলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানা গেছে। উপজেলার ৬৩ নং আয়শাবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিদ্যালয়ে ১৯৯০ সালে চার কক্ষ বিশিষ্ট একটি সেমি পাকা ও ২০০০ সালে চার কক্ষ বিশিষ্ট এক তলা একটি ভবন এবং ২০০৫ সালে দুই কক্ষ বিশিষ্ট প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেল্টার ভবনটি নির্মাণ করা হয় বলে বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে। যেখানে ৭শ’র অধীক শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয় টিতে প্রাক প্রাথমিক শ্রেণী থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ৪৮৫ জন ও ৬ষ্ট শ্রেণী থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত ২৩৩ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়টিতে ২০১৪ সালে ৬ষ্ট শ্রেণী থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানের জন্য প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গিয়েছে, সেমি পাকা ভবনটির নেই কোনো দরজা জানালা। এছাড়াও বারান্দার পিলারগুলোও ভেঙ্গে গিয়েছে এবং উপরের টিনগুলোও পুরোনো হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগে। সাইক্লোন সেল্টারটির ছাদের ঢালাই ভেঙ্গে বিভিন্ন স্থানে রড বের হয়ে গিয়েছে। যার ফলে ভবনটিতে পাঠদানের অনুপযোগী হওয়ায় শিক্ষকরা সেল্টার ভবনের নিচে টিন দিয়ে বেড়া তৈরী করে সেখানে পাঠদান করেন। এক তলা বিশিষ্ট ভবনটি বেশ পুরোনো হওয়ায় ছাদের ঢালাই,পিলার এবং দেয়ালের পলেস্তারা ভেঙ্গে পড়ছে। বিদ্যালয়ের ভবনগুলো যে কোনও সময় ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা করছে।
ঐ স্কুলটির শিক্ষার্থী সুরমা,আবুবকর ও জুয়েনা জানান,এখানে ভবনগুলো জরাজীর্ণ ও পড়ালেখা করার মতো সুন্দর কোনো পরিবেশ নেই। বিদ্যালয়ের প্রধাণ শিক্ষক মো. সলিম উল্লাহ বলেন,“বিদ্যালয়ের ভবনগুলোতে ছাদ,পিলার ও ভীম ফেঁটে গিয়েছে। শিক্ষকরা ভবনগুলোকে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে একাধীকবার জানিয়েছেন। ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে রয়েছে। এছাড়াও শিক্ষার্থী অনুযায়ী পর্যাপ্ত বেঞ্চ ও আসবাবপত্র না থাকায় পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের বিদ্যালয় থেকে পুরোনো বেঞ্চ এনে ক্লাস করা হচ্ছে”। সহকারি শিক্ষক হাসান সেলিম ও নজরুল ইসলাম বলেন, “বিদ্যালয়টি একটি ব্রিজের ঢাল সংলগ্ন হওয়ায় ট্রাক,ট্রলিসহ যে কোনও যানবাহনের দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা নিয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছি”। শিক্ষার্থীদের অভিভাবক আবু জাহের মিস্ত্রি ও সুমন ডাক্তার বলেন,“বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ হওয়ায় এবং সড়ক ও ব্রিজের ঢাল সংলগ্ন হওয়ায় ছোট,ছোট শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে আমরা বেশ চিন্তিত থাকি কখোন যেন আবার দূর্ঘটনা ঘটে”।
এ বিষয়ে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো.শফিকুল ইসলাম কালজয়ীকে জানান, আমরা বিদ্যালয়টির জন্য ঊর্ধ্বোতন কর্তৃপক্ষ বরাবর নতুন ভবনের চাহিদা চেয়ে পাঠিয়েছি। আশাকরি কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন।