চাঁদপুরের কচুয়ায় ১৪ বছরের ভাগ্নিকে ধর্ষনের ফলে অন্তঃসত্তা হওয়া এবং জোরপূর্বক ঔষধ সেবনের মাধ্যমে গর্ভপাত করিয়ে মৃত সন্তানকে ধর্মীয় বিধান অনুসরণ না করে দাফন সম্পন্ন করার দায়ে ধর্ষক ও সহায়তাকারী দুজনকে আটক করেছে র্যাব।বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লা এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার জুনাসার গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেন এর ছেলে মোঃ শিপন হোসেন (১৯) গত বছরের অক্টোবর মাস হতে জানুয়ারি ২০২১ ইং মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তার ১৪ বছরের আপন ভাগ্নিকে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষন করে।
বিভিন্ন সময়ে ধর্ষনের ফলে ওই মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়ে।বিষয়টি প্রথমে মেয়েটির মা বুঝতে পেরে তার আপন ভাই মোঃ মফিজুল ইসলাম (৩৫) কে জানালে সে বিষয়টি কারো কাছে প্রকাশ করতে নিষেধ করে এবং কাউকে জানালে পরিবারটিকে সমাজ থেকে বিতাড়িত করে দিবে বলে ভয়-ভীতি দেখায়।এরই মধ্যে মফিজুল ইসলাম পরিবারকে কুমিল্লার লাকসামে একটি ভাড়া বাড়িতে জোরপূর্বক রেখে আসে এবং সেখানে থাকা অবস্থায় ভিকটিমকে গর্ভপাত করানোর জন্য জোরপূর্বক ঔষধ সেবন করায়।
ঔষধ সেবনের ফলে গত ২৪ মে মেয়েটির পেটে ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে একটি মৃত সন্তান প্রসব করে।মৃত সন্তান প্রসব করার পর কোন ধর্মীয় বিধান অনুসরণ না করেই দ্রুততম সময়ের মধ্যে মফিজুল ইসলাম বাচ্চাটিকে দাফন করে।পরবর্তীতে মফিজুল ইসলাম বিষয়টি কাউকে না জানানারে জন্য বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখায়।অকাল গর্ভপাত হওয়ার কারণে মেয়েটি অসুস্থ্য হয়ে পড়লে মেয়েটির মা বিষয়টি মফিজুল ইসলামকে জানায় এবং অসুস্থ্য মেয়েটির চিকিৎসা করানোর জন্য টাকা চায়।
মফিজুল ইসলাম কোন সাহায্য না করে তাদেরকে লাকসামের ভাড়া বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।এবং বিষয়টি কারো কাছে না বলার জন্য বারবার হুমকি দিতে থাকে এবং ধর্ষক মোঃ শিপন হাসেনকে আত্মগাপেনে রাখে।মেয়েটির মা বিষয়টি আত্মীয়-স্বজন এবং স্থানীয় বিভিন্ন লোকজনকে জানিয়ে সামাজিকভাবে কোন প্রতিকার ও সাহায্য-সহযোগীতা না পেয়ে গত এক সপ্তাহ পূর্বে মোবাইল ফোনে বিষয়টি র্যাব-১১,সিপিসি-২, কুমিল্লা ক্যাম্পকে অবহিত করে।
তারই প্রেক্ষিতে র্যাব বিভিন্ন তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করতে থাকে।পরবর্তীতে গোপেন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার (০৭ অক্টোবর) রাতে কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার মুদাফফরগঞ্জ এবং চাঁদপুর জেলা শাহরাস্তি থানার বানিয়া দিঘীরপাড় এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।অভিযানে ধর্ষক মোঃ শিপন হাসেন ও তার সহযোগী মফিজুল ইসলামকে আটক করে।আসামীদ্বয়কে প্রাথমিজিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের অপরাধের বিষয়টি স্বীকার করে।এ বিষয়ে আটককৃতদের বিরুদ্ধে চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান র্যাব।