সাতক্ষীরায় কারেন্ট পোকায় খেয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। হেমন্তের ফসলভরা মাঠে কারেন্ট পোকার আক্রমনে দিশেহারা কৃষক। থোড় থেকে শীষ বের হয়ে সবে সোনালী রঙ ধরেছিল কৃষকের ক্ষেতে।
আমন ধানের শীষ দেখে খুশি হয়েছিলেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার কৃষকরা। খুশিতে ক্ষেত থেকে ধান কেটে ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঠিক সেই সময়েই দেখা দিয়েছে কারেন্ট পোকার আক্রমণ। চলতি মৌসুমে ক্ষেতে বাদামী গাছ ফড়িং বা কারেন্ট পোকার আক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ধানে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তালা উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তালা উপজেলায় এ বছর ৮ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা অতিক্রম করে ৯ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। তবে এই লক্ষ্যমাত্রায় ধস নামবে পোকার আক্রমণ ঠেকানো সম্ভব না হলে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ পোকা দমনে ধান ক্ষেত পরিদর্শন, প্রচারপত্র বিলি এবং পরামর্শ দিলেও কৃষকরা সঠিক সময় তদারকির না করার অভিযোগ তুলেছেন কৃষি অফিসের মাঠ কর্মীদের বিরদ্ধে।
তালা উপজেলার বিভিন্ন বিলে ধানের ক্ষেতের গিয়ে দেখা যায়, সবুজের মাঝেই সোনালী রঙের ধান উঁকি দিচ্ছে। অধিকাংশ ধানে পাক ধরেছে। এসময় পোকার আক্রমনে এখানকার কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, পোকা দমনে বাজারে প্রয়োজনীয় কীটনাশক না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এখন সময় মতো পোকা দমন করতে না পারলে আমন ধান ঘরে উঠানো অসম্ভব হবে।
স্থানীয় কৃষকরা এ পোকার নাম দিয়েছে কারেন্ট পোকা। এতে করে আক্রান্ত ধানের শীষ গাছ থেকে মুহূর্তের মধ্যে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে। পোকার আক্রমন এতটাই ভয়াবহ যে, পোকা এক মাঠ থেকে অপর মাঠে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।
কৃষক সিরাজুল ইসলাম ও শাহাদাত হোসেন জানান, কয়েক দিন ধরে এলাকার ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমনের পর সকল জমিতে এখন ধান আর গাছে নেই। বর্তমান বাজার মূল্য উদ্ধগতির কারণে সার বীজ কীটনাশক ব্যবহার করে এখন ফসল ঘরে তোলা তাদের দায় হয়ে পড়েছে।
এদিকে অনেক কৃষক জমি বর্গা ও ধার দেনা করে ক্ষেতে ধান লাগিয়েছেন। সময়মত টাকা পরিশোধ করতে না পারলে তাদের রাস্তায় বসতে হবে। কৃষকদের আশংকা সময় মতো পোকা দমন করতে না পারলে আমন উৎপাদন মারাত্মক ব্যহত হতে পারে।
তালা উপজলো কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, তালা উপজেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের সময় হঠাৎ করে বাদামী গাছ ফড়িং বা কারেন্ট পোকার আক্রমণ করেছে। আমাদের মাঠকর্মী কৃষকদের সাথে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রক্ষা করছেন এবং বাদামী গাছ ফড়িং বা কারেন্ট পোকার আক্রমণ হতে ধান বাঁচাতে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।