রূপগঞ্জে রবিবার দুপুরে দুর্ঘটনা কবলিত হাশেম ফুড কারখানা পরিদর্শনে আসেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী ও গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি। এ সময় ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির দূর্নীতি ও ব্যর্থতার কারণেই এই ঘটনা ও এতো প্রাণহানী ঘটেছে। রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর দীর্ঘসময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মালিকসহ দায়িদের কোনো বিচার হয়নি। এই বিচারহীনতার কারণেই বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, যেহেতু রাতের আঁধারে এ সরকারকে প্রশাসন ক্ষমতায় নিয়ে এসেছে তাই প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জনগনকে পরোয়া করেনা। দুর্ঘটনা কবলিত ভবনটি ঘুরে দেখে তারা এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানীর জন্য সরকারকে দায়ী করে বলেন, এসব তদারকি করার জন্য সরকারের যে সমস্ত সংস্থা আছে তাদের দূর্নীতি ও ব্যার্থতার কারনেই এতগুলি প্রাণ আজকে ঝড়ে পড়েছে।
তিনি দাবী করেন, কল কারখানা অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি নিয়মিত পরিদর্শনে আসতেন তাহলে মালিকপক্ষের অনিয়মগুলি ধরা পড়তো। কিন্তু তারা মলিকপক্ষের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহন করে এসব পরিদর্শন না করে তারা নিরবে নিভৃতে বসে থাকেন। যে কারণেই আজকে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও এত প্রাণহানী ঘটেছে। তিনি এসব দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী জানান। যাতে ভবিষ্যতে দেশের অন্য কোনো কারখানায় এমন দুর্ঘটনা না ঘটে।
তিনি বলেন, সেসঙ্গে মালিকপক্ষও এ দুর্ঘটনার দায় কোনোভাবে এড়াতে পারেনা। মালিকপক্ষকে শুধু গ্রেফতার করলেই হবেনা শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কারন রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর দীর্ঘসময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মালিকসহ দায়িদের কোনো বিচার হয়নি। এই বিচারহীনতার কারণেই বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে। যেহেতু রাতের আঁধারে এ সরকারকে প্রশাসন ক্ষমতায় নিয়ে এসেছে তাই প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জনগনকে পরোয়া করে না। জনগনের জীবনের দাম দেয় না। এই প্রশাসনের লাগাম টেনে ধরার সময় এসেছে। তিনি বলেন, একজন মানুষ জীবনে যা আয় করতো সে অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এ সময় জুনায়েদ সাকি এই দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছে তাদের প্রত্যেককেই ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা করে দিতে তিনি সরকারের কাছে দাবী জানান। একইসঙ্গে যাদের পরিবারে কাজের উপযুক্ত লোক আছে তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা, যাদের সন্তান লেখাপড়া করে তাদের লেখাপড়ার দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।
তিনি বলেন, এ দুর্ঘটনার সময় যারা আগুন নেভাতে এসেছিলো সেই নিহতদের স্বজন, এলাকাবাসীর উপর পুলিশি হামলার নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে নারায়ণগঞ্জে গণসংহতি আন্দোলনের কর্মীদের সমাবেশে পুলিশের হামলা চালিয়ে সমাবেশ পন্ড করে দেয়ার নিন্দা জানান। তিনি বলেন, সরকারের প্রশাসন যন্ত্রের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ যে কাজ করেনা তারই উদাহরণ সেজান জুস কারখানার এ অগ্নিকান্ড। কারণ প্রশাসন যন্ত্র যদি সঠিকভাবে মনিটরিং করতো তবে এ দুর্ঘটনা ঘটতো না।
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তব্যক্তিরা ফ্যাক্টরিগুলি থেকে মাসোহারা আদায় করেন বলেই তারা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও গ্রহন করেন না। কোনো অনিয়মও দূর হয় না। গত শনিবার বিকেল পাঁচটায় রুপগঞ্জে আগুনে ৫২ জন নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবীতে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করছিল গণসংহতি আন্দোলন। এ সময় পুলিশ তাদের উপর হামলা চালিয়ে ব্যানার ছিনিয়ে নেয় এবং সমাবেশ পন্ড করে দেয়।