শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী মালাকোচা গ্রামের এক বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে।৯ নভেম্বর মঙ্গলবার আনুমানিক রাত ৩ টার দিকে রানীশিমুল ইউনিয়নের মালাকোচা গ্রামের বন বিভাগের সংরক্ষিত পাহাড়ি টিলায় ঘটনাটি ঘটেছে।পরে মঙ্গলবার ভোরে বন বিভাগের লোকজন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়।বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
খবর পেয়ে শ্রীবরদী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডিএম শহিদুল ইসলাম,উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।জানা যায়,প্রায় ২০ দিন যাবত বন্য হাতির দল শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন পাহাড়ে অবস্থান করছে।পাহাড়ে খাদ্য সংকট থাকায় হাতির দল সন্ধ্যা হলে লোকালয়ে নেমে কৃষকদের পাকা ধান,সবজি বাগান সহ নানা ফসলাদি নষ্ট করছে।
হাতির আক্রমণ থেকে ফসলাদি রক্ষা করতে এলাকাবাসী সন্ধ্যার পর থেকে অবৈধভাবে জিআই তারের ঘের দিয়ে জেনারেটরের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়।মালাকোচা গ্রামে মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আমির উদ্দিন (৪৫) পাহাড়ি টিলায় সংরক্ষিত বনের জায়গায় অবৈধভাবে সবজি বাগান করেছে।মঙ্গলবার রাতে একটি হাতির দল খাদ্যের সন্ধানে ওই বাগানে আসে।এসময় জিআই তারে জেনারেটরের বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে আক্রান্ত হয়ে ২০-২৫ বছর বয়সী ১৫ ফুট লম্বা একটি পুরুষ জাতের হাতির মৃত্যু হয়।পরে ঘটনাস্থলেই গত করে মৃত হাতিটি মাটি চাপা দেওয়া হয়।
বালিজুড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন,এলাকার লোকজন বাড়িঘর ও ফসলাদি রক্ষার করার জন্য বৈদ্যুতিক লাইন দেয়।প্রাথমিকভাবে ধারনা করা যাচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।ময়নাতদন্ত শেষে প্রকৃত কারন জানা যাবে।এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।শ্রীবরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেনারি সার্জন ডা: মেহেদি হাসান বলেন, মৃত হাতিটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।ল্যাবের রিপোর্ট পেলে প্রকৃত কারন জানা যাবে।
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা আক্তার বলেন,হাতি মারা যাওয়ার খবর শুনে ঘটনাস্থলে এসেছি।প্রায় ২০ দিন আগে বন্য হাতির দল খাদ্যের সন্ধানে ভারত থেকে শ্রীবরদীর সীমান্তবর্তী পাহাড়ে এসেছে।এলাকার লোকজন জান-মাল রক্ষার্থে বিভিন্নভাবে কাজ করছে।হাতিটির নমুনা সংগ্রহ করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।
শ্রীবরদী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডিএম শহিদুল ইসলাম বলেন,হাতির উপদ্রব থেকে মানুষকে রক্ষা করতে উপজেলা প্রশাসন,বনবিভাগ সহ সকলেই বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।যেভাবে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে তা দুঃখজনক।পাহাড় গুলো হাতির বিচরণ ভূমি।তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে,যেন হাতির কোন ক্ষতি না হয়।