শেরপুর জেলার সদর উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের সাহাব্দীরচর গ্রামে ৪ আগস্ট বুধবার দুপুরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) শেরপুর জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তার নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সঙ্গীয় ফোর্সসহ রং-কেমিক্যাল মিশ্রিত ভেজাল গুড় তৈরির কারখানায় পৃথক দুটি অভিযান চালিয়ে কারখানার দুই মালিক মোঃ আব্বাস আলী (৪৫) কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও সাজল মিয়া (৪৭) কে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেই সাথে প্রত্যেককে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়েছে। দণ্ডিত মোঃ আব্বাস আলী সদর উপজেলার সাহাব্দীরচর দক্ষিণপাড়া গ্রামের ইমান আলীর ছেলে ও সাজল মিয়া একই গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এর তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার সাহাব্দীরচর গ্রামে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ রহমান ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মুন্তাসির বিল্লাহসহ সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান চালায়। এসময় সাহাব্দীরচর গ্রামে মোঃ আব্বাস আলী তার ভেজাল গুড় তৈরির কারখানায় আখের রস ব্যতিত চিটা গুড় (লালি), চিনি, ময়দা, হাইডোজ, রং ও ফিটকিরিসহ বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে গুড় তৈরি করার সময় তাকে হাতেনাতে আটক করা হয়।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪১ ধারায় ভোজল খাদ্য তৈরির করার দায়ে মোঃ আব্বাস আলীকে দোষী সাব্যস্থ করে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়। সেই সাথে ভেজাল গুড় তৈরির উপকরণ ধ্বংস করা হয়েছে। অপরদিকে একইদিন সাহাব্দীরচর দশানীপাড়ায় অভিযানিক দলটি সাজল মিয়ার গুড় তৈরির কারখানায় ভেজাল গুড় তৈরি করার সময় তাকে আটক করা হয়। এসময় ওই কারখানা থেকে ভেজাল তৈরির উপকরণ কিরা পোকাযুক্ত পঁচা চিটা গুড় (লালি), হাইডোজ, ফিটকিরি, রং ও রাসায়নিক কেমিক্যাল, ১০০ বস্তা চিনি ও ১৪ বস্তা ময়দা উদ্ধার করা হয়। এদিকে তৈরি করা বিপুল পরিমাণ ভেজাল গুড় ডোবার পানিতে ফেলে ধ্বংস করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত ভেজাল গুড় তৈরির কারখানার মালিক সাজল মিয়ার উপস্থিতিতে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা ও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়। এলাকাবাসী জানিয়েছে, সাহাব্দীরচর গ্রামের মোঃ আব্বাস আলী ও সাজল মিয়া ওই দুই ব্যক্তি বিগত ৪/৫ বছর ধরে জনস্বাস্থ্যর ক্ষতিকর গরুর খাদ্য চিটা গুড় (লালি), রং, কেমিক্যাল, রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করে স্থানীয় নয়আনী বাজারসহ জেলার বিভিন্নস্থানে বাজারজাত করে আসছিল।