লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মাহফুজার রহমান (১৯) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। নাবালিকা ঐ ছাত্রী ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানা গেছে।নাবালিকা গর্ভের সন্তানের পিতৃ পরিচয় প্রকাশ করলে হামলা শিকার হয় ঐ ছাত্রীর পরিবার।সোমবার (১৯ জুলাই) রাতে এ ঘটনায় ধর্ষক মাহফুজার রহমানকে প্রধান আসামি করে ঐ ছাত্রীর পরিবারের হামলা করার জন্য তার বড় ভাই মুসলিম (২১), পিতা ওমর আলী ও মাতা মোর্শেদা বেগমের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডীমারী ৭ নং ওয়ার্ডে এক অসহায় পরিবারের মেয়ে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রীটি। সে বড়খাতা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে।তার বাবা মা অন্যের বাড়িতে দিনমজুরি করে সংসার চালায়। বাবা আধপাগল হওয়ায় তেমন একটা কাজ করতে পারেনা।এ দিকে অভিযুক্ত মাহফুজার রহমান প্রতিবেশী প্রভাবশালী ওমর আলীর ছোট ছেলে। দুজনের বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় মেয়েটির বাড়িতে ছেলেটির অবাধে যাতায়াত ছিলো।
গত এক বছর আগে থেকে লম্পট মাহফুজার রহমান অসহায় মেয়েটিকে গোপনে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ফুসলাতো। এমতাবস্থায় গত ১৫ জানুয়ারী মেয়েটির বাবা মা প্রতিদিনের ন্যায় অন্যের বাড়িতে কাজ করতে যায়। সেদিন সকাল অনুমান ১০টার দিকে মেয়েটি বাড়িতে রান্নাঘরে রান্না করছিলো। সে সময় মেয়েটি ছাড়া বাড়িতে আর কেউ না থাকার সুযোগে লম্পট মাহফুজার রহমান মেয়েটিকে রান্নাঘর হতে মেয়েটিকে তুলে নিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে পাশে থাকা গোয়াল ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে।
ধর্ষণের পর এ কথা কাউকে বললে মেয়েটিকে বিয়ে না করার ভয় দেখায় অভিযুক্ত মাহফুজার রহমান। ফলে ঐ সময় মেয়েটি কাউকে কিছু জানায়নি। এভাবে অভিযুক্ত মাহফুজার রহমান প্রায়সময় মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে কাউকে দেখতে না পেলে মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে ধর্ষণ করে।এর কয়েকমাস পর মেয়েটির শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন এবং গর্ভে বাচ্চা হবার জন্য পেট ফুলে গেলে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। তারা মেয়েটিকে এর কারণ জানার জন্য চাপ দিলে সে সব কথা খুলে বলে।
এদিকে এ কথা জানতে পেরে ১৪ জুলাই সকাল ১১টার দিকে অভিযুক্ত মাহফুজার রহমান, তার বড় ভাই, বাবা মা মেয়েটির বাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এসময় মেয়েটি বড় ভাই প্রতিবাদ করলে তাদেরকে মারধোর করাসহ বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র চলে যাবার হুমকি দিয়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে সুষ্ঠু বিচারের জন্য মেয়েটির পরিবার স্থানীয়দের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিচার দিলেও অভিযুক্তরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ আমলে নেয়নি।
এরপর সোমবার (১৯ জুলাই) মেয়েটিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে দেখে মেয়েটি ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। অতঃপর মেয়েটির মা বাদী হয়ে হাতীবান্ধা থানায় তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়।
ধর্ষণের শিকার ঐ স্কুল ছাত্রীর সাথে কথা বললে তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে মাহফুজার রহমান তাকে অনেকবার ধর্ষণ করেছে। এখন তাকে মাহফুজার রহমান বিয়ে না করলে পেটের বাচ্চার নিয়ে আত্মহত্যা করা ছাড়া তার আর কোন উপায় নেই।এবিষয়ে অভিযুক্ত মাহফুজার রহমানের সাথে দেখা করতে তার বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে হাতীবান্ধা থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি এরশাদুল আলম বলেন, এবিষয়ে একটি মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের ধরার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।