মৌলভীবাজার বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলায় করোনা আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি বা তার স্বজন অক্সিজেনের জন্য ফোন করলেই অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে তাদের বাড়িতে ছুটে যাচ্ছে ‘ফ্রি হিউম্যান অক্সিজেন সার্ভিস’র স্বেচ্ছাসেবীরা। দুই উপজেলায় এ পর্যন্ত ৯০ জন রোগীকে বিনামূল্যে তারা এই সেবা দিয়েছেন। সংকটে ‘ফ্রি হিউম্যান অক্সিজেন সার্ভিস’ই যেন ভরসা। যাদের এই সেবা দেওয়া হচ্ছে, সামাজিক মর্যাদার কথা ভেবে তাদের নাম-পরিচয় গোপন রাখা হচ্ছে। এই মহৎ কার্যক্রমের উদ্যোক্তা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ স¤পাদক এসএম জাকির হোসাইন।চলতি বছরের মে মাসে ১৯টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে এই সেবা শুরু হয়। অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ায় (২৮জুলাই) এই কার্যক্রমে আরও ২০টি সিলিন্ডার যুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে ৩৭টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে রাত-দিন এই সেবা দেওয়া হচ্ছে। এই সেবা পেতে হলে নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রের প্রয়োজন হয়। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই সেবা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে সশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে হাসাপাতালগুলোতে অক্সিজেন সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। অক্সিজেন না পেয়ে অনেক রোগী মারা যাচ্ছেন। এই অবস্থায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য কিছু একটা করার তাগিদ অনুভব করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ স¤পাদক জুড়ী উপজেলার বাসিন্দা এসএম জাকির হোসাইন। করোনা আক্রান্ত কেউ অক্সিজেনের অভাবে যাতে মারা না যায়, সেজন্য তিনি বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেন। এর নাম দেন ‘ফ্রি হিউম্যান অক্সিজেন সার্ভিস’।‘ফ্রি হিউম্যান অক্সিজেন সার্ভিস’ এর বড়লেখার সমন্বয়ক ও পৌরসভার কাউন্সিলর রাহেন পারেভজ রিপন বলেন, করোনাক্রান্ত কেউ যাতে অক্সিজেনের কষ্টে মারা না যায় সেজন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন ভাই এই উদ্যোগ নেন। মানবিক কারণে আমরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছি। কোথাও করোনা আক্রান্ত কারও অক্সিজেনের প্রয়োজন হলে তারা আমাদের কাছে কল দেন। আমরা অক্সিজেন নিয়ে তাদের বাড়িতে হাজির হই।
‘ফ্রি হিউম্যান অক্সিজেন সার্ভিস’-এর জুড়ীর সমন্বয়ক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সল আহমদ বলেন, যখন কারও অক্সিজেনের প্রয়োজন হচ্ছে তারা আমাদের কল দিচ্ছেন। আমরা অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে তাদের বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছি। জুড়ীতে ১৮টি সিলিন্ডার আছে। আমরা এই পর্যন্ত প্রায় ৫০ জনকে এই সেবা দেওয়া হয়েছে। আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যখন করোনা আক্রান্ত কারও অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে, তারা আমাদের স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে কল দিলেই তারা অক্সিজেন তার বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন। স্বেচ্ছাসেবীরা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন। তিনি বলেন, ভয়াল এ সংকটে মানুষের পাশে দাঁড়ানো মানুষের দায়িত্ব। আমিও সেই দায়িত্ব পালন করছি। সমাজের বিত্তবানদের উচিত এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাহলে হয়তো এই অন্ধকার কেটে একদিন আলো আসবেই। সকলে সচেতন হোন,অন্যকে সচেতন করতে উদভোদ্ধ করুন।