মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনকারী বিভিন্ন সংযোগ সড়কের ব্রীজ-কালভার্ট ভেঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। পুনঃনির্মাণ অথবা সংস্কার না হওয়ায় জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়েই লোকজন ও যানবাহন এসব ব্রীজ-কালভাট পারি দিচ্ছে। কোন পদক্ষেই চোখে পড়ছে না কর্তৃপক্ষের।
বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অবহেলিত সিংগাইরে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন রাস্তা ঘাটের যথেষ্ট উন্নয়ন হলেও ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজ-কালভার্টের জন্য মানুষ তার সুফল ভোগ করতে পারছে না। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জামির্ত্তা ও চান্দহর ইউনিয়নের সংযোগস্থলে বেলকপাড়া সেতুটি ভেঙ্গে পরে যেন যেকোন সময যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া বায়রা ইউনিয়নের বাইমাইল বাসষ্ট্যান্ডের দক্ষিণে খালের উপর জরাজীর্ণ ব্রীজটি যেকোন সময় ভেঙ্গে পরে প্রাণহানিসহ বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এছাড়াও উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে রয়েছে প্রায় ২৫টির ওপরে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজ-কালভার্ট। এগুলোর মধ্যে রয়েছে -ধল্লা ইউনিয়নের জায়গীর ব্রীজ, বিন্নাডাঙ্গী বাসষ্ট্যান্ড ও ওয়েস্ট টাউন ব্রীজ, ভূমদক্ষিণ বাসষ্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশের ব্রিজ, জামির্ত্তা-হাতনি সড়কের মাঝামাঝি ও চাপরাইল হাতনি সংযোগ সড়কের ব্রীজ, চান্দহরের চক পালপাড়া বেইলি ব্রীজ, জয়মন্টপ ইউনিয়নের পুরাতন ও নতুন বাসষ্ট্যান্ডের ব্রীজ, দেউলি ও কিটিংচর ব্রীজ, বানিয়ারা ও রামনগর কালভার্ট, সিংগাইর সদরের আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ব্রিজ, রঙ্গের বাজার ও ঋষিপাড়া ব্রীজ, সায়েস্তা ইউনিয়নের কালিন্দি, মোসলেমাবাদ, বালিয়াডাঙ্গী ও লক্ষিপুর ব্রিজ এবং জামশার সারারিয়া কালভার্ট অন্যতম।
সরজমিনে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্রিজ-কালভার্টের রেলিং ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া আরসিসি ঢালাই ওঠে রড বেড়িয়ে গেছে। কোনটার গোড়ায় আবার মাটি নেই । এ অবস্থার মধ্য দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে এবং পায়ে হেঁটে অসুস্থ রোগী, স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীসহ সাধারণ লোকজন প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছে। এছাড়া কৃষি নির্ভর সিংগাইরের কৃষির উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতেও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে কৃষক।
ভেলক পাড়া, জায়গীর ও বাইমাইলের ব্রীজ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যানবাহনগুলো বিকল্প সড়ক দিয়ে চলাচল করছে। একদিকে যেমন সময় ব্যয় হচ্ছে অন্যদিকে বাড়তি ভাড়া দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভুক্তভোগীরা।স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, যথাযথ তদারকির অভাবে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে এসব ব্রিজ-কালভাট তৈরী হওয়ায় অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে। এছাড়া বেশির ভাগ রাস্তায় সবসময় ইটভাটার ট্রাক ও ড্রাম ট্রাক ওভারলোডে ইট ও মাটি ভর্তি করে চলাচলের কারণেও এমন ক্ষতি হচ্ছে বলে তারা মনে করেন। অতি দ্রুত ঝুঁকিপূর্ন ব্রিজ-কালভার্টগুলো পুনঃনির্মাণ অথবা সংস্কারের দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী রুবাইয়েত জামান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজগুলোর তালিকা করে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই ভাঙ্গা ব্রিজগুলোর নির্মাণ কাজ করা হবে।