কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার খালবিল ও কৃষিজমি থেকে মাছ ধরার উৎসবে মেতেছে শিশু কিশোরসহ সকল বয়সী মানুুষ। বর্ষায় জমা নতুন পানিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাল, ডোবা ও জমি থেকে মাছ ধরতে হাতে ঝাঁকি জাল, টানা জাল ও ঠেলা জাল নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। কেউ মাছ ধরছেন জীবিকার তাগিদে, কেউ বা শখের বশে। প্রতিদিনই তাদের জালে ধরা পড়ছে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় ছোট-বড় মাছ। কেউ আবার পাঁটিবাঁধ ও চাঁইয়ের সাহায্যে মাছ ধরছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, নিজেদের পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে অনেকেই এসব দেশী মাছ বাজারে বিক্রি করে অর্থনৈতিক ভাবে অতিরিক্ত আয় করছেন।
উপজেলার বালিনা গ্রামের পেশাদার জেলে ফুল মিয়া ঝাঁকি জাল দিয়ে বালিনা বড় খালে মাছ ধরছেন। তিনি জানান, প্রতিবছরই এই মৌসুমে এলাকার বিভিন্ন খাল থেকে মাছ ধরেন তিনি ও তার সহযোগীরা। তারা বর্ষা মৌসুমে পুরো সময় খাল থেকে মাছ ধরে তা বাজারে বিক্রয় করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। ফুল মিয়া বলেন, বৃষ্টি হলে বেশি মাছ ধরা যায়। আমরা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বৃষ্টির সময়টাকে মাছ ধারা জন্য বেশি প্রাধান্য দেই। তখন জাল ফেললেই মাছ পাওয়া যায়।
উপজেলার দুলালপুর গ্রামের স্কুল ছাত্র শামীম হাসান বলেন, শখের বসে বড় ভাইয়ের সাথে পশ্চিম বিলে মাছ ধরতে এসেছি। বড় ভাই প্রতিদিনই এলাকার অন্যান্যদের সাথে মাছ ধরতে আসেন। তাই আজ আমিও এসেছি মাছ ধরতে। আমরা দুই ভাই ঠেলা জাল দিয়ে প্রায় তিন কেজির মতো পুটি, কই, চান্দাসহ বিভিন্ন দেশী প্রজাতির মাছ পেয়েছি। আমার কাছে অনেক ভালো লাগছে।
বিলের জমি থেকে মাছ ধরে বাড়ি ফেরার সময় রিপন মিয়া বলেন, আমি ৭ টি সুতার জাল (প্রতিটা ১০০ ফিট লাম্বা) বাঁশের কঞ্চি দিয়ে জমির আইলে পেতেছি। এর মাধ্যমে প্রতিদিন যে মাছ ধরা হয় তা আমার পারিবারিক চাহিদা মিঠিয়ে বাজারেও বিক্রি করতে পারি। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয় বনিক বলেন, উনমুক্ত জলাশয় থেকে মাছ না ধরার বিষয়ে কিছু নির্ধাতির সময় আছে।
ওই সময়ে যে উপজেলা জেলেরা এবং স্থানীয় লোকজন মাছ না ধরে সে বিষয়ে আমরা উপজেলা মৎস্য দপ্তর বিভিন্ন প্রচার প্রচারণা চালিয়েছি। এছাড়াও উনমুক্ত জলাশয়ে মাছ মারার ক্ষেত্রে কারেন্ট জাল যে ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়েও আমরা প্রশাসনের সহযোগিতায় বিভিন্ন সময়ে অভিযান পরিচালনা করেছি এবং তা অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, কারেন্ট জাল, বেড়জাল এবং বিনজাল ব্যবহারকারী জেলেদের আইনের আওতায় আনার জন্য উপজেলা প্রশাসন কাজ করছেন।
তিনি আরও বলেন যারাই খাল, বিলসহ উনমুক্ত জলাশয় থেকে মাছ ধরছে আমি তাদের আহবান জানাবো, আপনারা পোনা মাছ ও পেটে ডিম আছে এমন মাছ মারা থেকে বিরত থাকবেন। এ পেটে ডিম আছে এমন মা মাছ গুলো প্রজোনন করলে মাছের বংশ বিস্তার হবে এবং মাছ বাড়বে।