এখন ভাদ্র মাস। তাল পাকা গরমে গাছে গাছে পাকছে তাল। সেই পাকা তাল দিয়ে গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে চলছে পিঠা উৎসব। এরই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে চলছে এই মধু পিঠা উৎসব। চারদিকে শুধুু মৌ মৌ গন্ধ।
উপজেলার প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে তাল থেকে তৈরি ভিন্ন ভিন্ন স্বাদে ও গন্ধে আর বাহারি নামের পায়েশ, মালপোয়া ,তালবড়া ও কেকসহ নানা ধরনের পিঠা তৈরির আমেজ চলছে চারিদিকে। এ উপলক্ষে চলছে ঘরে ঘরে আত্মীয়তার মিলন মেলা। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য বহন করা এ যেন এক মধুমাস।
জানা যায়, সব গাছে তাল ধরে না। পুরুষ তালগাছ শুধু রস দেয়। যা দিয়ে লালি ,গুড় ,পাটারি তৈরি হয়। যা তালের বিভিন্ন ধরনের পিঠা পায়েস তৈরিতে সহায়তা করে। পাকা তাল কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তালে রয়েছে পুষ্টি ভরা নানা গুণ। যেমন একটি পাকা তালের প্রতি ১০০ গ্রামে জলীয় অংশ ৭৭ দশমিক ২ গ্রাম, খনিজ শূন্য দশমিক ৭ গ্রাম, আঁশ শূন্য দশমিক ৫ গ্রাম, আমিষ শূন্য দশমিক ৭ গ্রাম, চর্বি শূন্য দশমিক ২ গ্রাম, শর্করা ২০ দশমিক ৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৯ মিলিগ্রাম ও খাদ্যশক্তি ৮৭ কিলোক্যালরি রয়েছে। যার কারণে এটি শুধু পিঠা উৎসবেরই ফল নয়।
বরং বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রতিরোধের একটি ঔষধি ফল।এর দ্বারা বিভিন্ন ধরনের রোগের চিকিৎসা হয়। যেমন অনিদ্রায় বকবকানি, গনোরিয়া, শ্বেত প্রদরে, রক্তপ্রদরে, অম্ল শ্রমে ক্লান্তিতে ,অম্ল অজীর্ণ, পেট ব্যথায়,উদরী রোগে ও ঘনমূত্ররোধে সহায়তা করে। এছাড়াও তালের রস তিনটি আশয়ে প্রভাব বিস্তার করতে পারে আমাশয়, অগ্নাশয়,ও পচ্যমানাশয়ে। এছাড়াও তাল প্রাপ্ত বয়স্ক হবার আগে হয় তালশাঁস যা খুব সুস্বাদু এবং তালের ডাব নামে সমাদৃত।
এদিকে সুধীমহল তালের অস্তিত্ব সংকটের কথা উল্লেখ করে বলেন, দিন দিন তাল গাছ হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ বৃক্ষসম্পদ থেকে। আধুনিক নগরায়ন ও বৃক্ষ প্রেমিকের অভাবজনিত কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কমে আসছে তাল গাছ।