যশোরের অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোডে অবস্থিত পালস্ ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের ভুল রিপোর্টে সেবা নিতে আসা সাধারণ জনতা হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি একটি এক্সরে রিপোর্টে ভুল রোগ নির্ণয়ের বিষয়টা নিয়ে চিকিৎসা পাড়ায় আলোচনা সমালোচনা কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানের নামে উঠে আসে নানা অভিযোগ অনিয়মের কথা। সরকার ঘোষিত ৭২ ঘন্টার মধ্যে অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের ঘোষনা দেওয়া হলেও শুধু মাত্র নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হয়ে পরিবারের অন্য সদস্যের নামে প্রতিষ্ঠান তৈরি করে কোন শক্তিবলে অবৈধ পন্থায় কিভাবে নিজে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন এমন প্রশ্ন জনমনে।
জানা যায়, নওয়াপাড়া সরকারি মহাবিদ্যালয়ের এইস এস সি পরীক্ষার্থী তারেক জামিল (২২) গত ১১ জুলাই পেটে ব্যাথা ও বমি নিয়ে চিকিৎসার জন্য এক চিকিৎসকের কাছে আসেন। চিকিৎসক তাকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি, হেমাটোলজি ও এক্স-রে করার পরামর্শ দেন। পরদিন ১২ জুলাই ওই রোগী পালস্ ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার পরীক্ষার জন্য আসেন। সেখানে এক্সরে করে কিছুক্ষনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়া হয়।
তার এক্স-রে রিপোর্টে দেখা যায় ডান কিডনিতে পাথর। এক্সরে রিপোর্ট খারাপ আসায় রোগীর পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তারা আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য ১৩ জুলাই সকালে খুলনা গাজী মেডিকেলে কলেজ হাসপাতাল সহ স্থানীয় অপর একটি ডায়াগনস্টিকে এক্স-রে রিপোর্ট করান। সেখানকার রিপোর্টে দেখা যায় পেলভিসের বাম দিকে শিরায় ইউরোগ্রাফি ফ্লেবোলিথের স্বাভাবিক আছে।
রোগীর ইন্ট্রাভেনাস ইউরোগ্রাফি কন্ট্রোল ফিল্মটিতে ২টি রেডিও-অস্বচ্ছ ঘনত্ব দেখানো হয়েছে, ইউরেটেরোস্কোপি একটি সাধারণ মূত্রনালী দেখিয়েছে এবং কিডনিতে কোনও ক্ষত বা পাথর দেখা যায়নি। এছাড়া স্থানীয় অপর ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রিপোর্টে স্বাভাবিক কুব অধ্যয়ন দেখতে পাওয়া যায়।
স্বাভাবিক কিডনি, ইউরেটার এবং ব্লাডার অধ্যয়নটি আপনার অবিলম্বে ব্যথা বা একটি অবস্থা নির্ণয় করতে সাহায্য করতে পারে, এটি একটি নির্ণয়ের দিকে একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ হতে পারে।
এ বিষয়ে পালস্ ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের কথিত পরিচালক ও অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. স্বাগত দাস বলেন, আমরা এক্সরে রিপোর্ট অনলাইনের মাধ্যমে বাইরের থেকে করি। এতে ভুল হতেই পারে। এটা এমন কোন বিষয় না।
এ বিষয়ে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (THA) ডা. ওহিদুজ্জামান খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি নয় বলে জানান।
জেলা সিভিল সার্জন বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হলাম এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অতি দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।