করোনার ছোবলে এখনও আক্রান্ত বিশ্ব।বাংলাদেশও করোনা মুক্ত নয়।এ অবস্থায় করোনার মধ্যেই শেষ হলো প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচন।দ্বিতীয় ধাপে শীঘ্রই নির্বাচন আসছে এটাও নিশ্চিত।কারণ,এখন করোনার ছোবল অনেকটাই কম।প্রথম ধাপের নির্বাচনের পর সম্ভাব্য দ্বিতীয় ধাপে যারা নির্বাচনে অবতীর্ণ হবে তারা নেমে পড়েছে নির্বাচনী মাঠে।বেলাবতে কোরবানি ঈদের আগে থেকেই তোড়জোড় শুরু হলেও তা মূলত প্রার্থী আর নেতা কেন্দ্রিক।
প্রার্থীরা রাতে দিনে নেতার পিছনে ছুটছেন তার হ্যাঁ বোধক সম্মতি আর কেন্দ্রে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির আশায়।নির্বাচন কমিশনের ইঙ্গিত অনুযায়ী যথাসময়ে হবে নির্বাচন।যেহেতু আইনে আগামী বছরের মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের আগে ইউপি নির্বাচন শুরু করতে হবে,আর শেষ করতে হবে জুনের আগেই।অবশ্য আইন অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দওন অর্থাৎ ৬ মাস পূর্বেই নির্বাচন হতে হবে।এছাড়া জেলা পরিষদের নির্বাচনও করতে হবে আগামী বছরের শেষ দিকে।
আবার উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভার নির্বাচন হবে ২০২৪ সালে।অবশ্য এর আগে ২০২৩ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে।এর পরে হবে উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচন।বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১ টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে।নিয়ম অনুযায়ী কোনো ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।এই হিসাব অনুযায়ী,আগামী বছরের মার্চে যেসব ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচ বছর মেয়াদ হবে,সেসব ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে এ বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী বছরের মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে।
আর যেসব ইউনিয়ন পরিষদের মেয়াদ আগামী বছরের জুনের প্রথম দিকেই শেষ হবে,সেসব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ করতে হবে এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে।আর অল্প সময়ই হাতে আছে।সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন অনেক কিছুই জানান দেয়।এ নির্বাচনে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় জনগণ নির্বাচনে সবচেয়ে বড় নিয়ামক।লক্ষ্য করে দেখা গেছে অনেক স্থানেই দলীয় প্রার্থীকে পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে বিদ্রোহীরা।
এসব এলাকার নেতাকর্মীরা স্থানীয় এমপি ও এলাকার কেন্দ্রীয় নেতাদের বিপক্ষে নানাবিধ অভিযোগ ও করেছেন।তাদের মতে অর্থের বিনিময়ে বা আত্মীয়তার সুত্র ধরে দলে অপরিচিত,বিগত সময়ে আওয়ামীলীগের বিরোধিতা কারীদের নৌকা প্রতীক দেওয়ার কারণে আওয়ামীলীগ নিজ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যেতে বাধ্য হয়েছে।বেলাব উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নের বর্তমান ও সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা এখন সরব।
চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাশাপাশি মেম্বার প্রার্র্থীদের ও মাঠ চষে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে।ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে বাড়ি,পাড়া-মহল্লা,হাট-বাজার ও রাজনৈতিক কার্যালয়গুলো এখনই প্রায় সরগরম।কোথাও কোথাও শুরু হয়ে গেছে নগদ অর্থের ছড়াছড়িও।তবে এ অর্থের উৎস কিন্তু জেলা পরিষদ সদস্যরা।কারণ,ইউপি নির্বাচন শেষেই তাদের নির্বাচন।তাই পছন্দের প্রার্থীকে পাশ করাতে টাকার ব্যাগ নিয়ে ঘুরছেন কেউ কেউ।
জানা গেছে,বিভিন্ন এলাকায় জেলা পরিষদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন থেকেই আগাম বিনিয়োগ করতে শুরু করেছেন ইউপি নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পেছনে।কেউ কেউ ঐসব প্রার্থীদের নির্বাচনের পুরো খরচও বহন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা খরচ করা শুরু করেছেন।ফলে ইউপি ও জেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখন থেকেই টাকার ছড়াছড়ি শুরু হয়েছে।
আজকাল জনগণের ভোটের কোনো বিষয় না থাকায় জনকল্যাণ বা জনসেবার ছিটেফাঁটাও নেই,আছে শুধু অর্থ কড়ি বিনিয়োগ আর দুর্বৃত্তায়ন।নির্বাচিত হয়ে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিতেই তারা এখন থেকেই বিনিয়োগ শুরু করেছেন।অর্থ ব্যয় করে যারা পদে আসছেন তারা নামে জনপ্রতিনিধি হলেও বাস্তবে শোষক,দুর্বৃত্ত আর নষ্ট।এরা দেশের বা জনগণের উন্নয়ন নয়,নিজের উন্নয়নের জন্যই এখানে আসে।