কুমিল্লা দেবীদ্বারে মেহেদী হাসান শান্ত (১৬) হত্যার বিচারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। শনিবার সকাল উপজেলার ৬নং ফতেহাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মানববন্ধনে শান্তর মা মোসঃ মরিয়ম বিবি বলেন, আমি খুনি আল আমিনের ফাঁসি চাই। শেখ হাসিনা শুধু একজন প্রধান মন্ত্রীই নয়! তিনি একজন মাও। আমি মা হিসেবে শেখ হাসিনার কাছে আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমি বাড়ি গাড়ী কিছুই চাইনা শুধু হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
মানববন্ধন চলাকালে শান্ত হত্যার বিচার চাই বিচার চাই, ছাত্রলীগ নেতা অনিকের ফাঁসী চাই, সাদ্দাম-আল আমিনের ফাঁসী চাই শ্লোগানে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে খলিলপুর বাজার।
শান্তর বাবা জাকির হোসেন সরকার বলেন, অনিক ও সাদ্দামের পূর্ব পরিকল্পনায় শান্তকে হত্যা করা হয়েছে। তাদের পরিকল্পনায় আল আমিন আমার ছেলেকে ছুড়ি দিয়ে ঘাই দেয়। হত্যার আগের দিন মসজিদে ঘোষণা ও ঘটনার দিন অনিক এবং সাদ্দামের ফোন আলাপই তার প্রমান। অনিকের নেতৃত্বে আমাকে থানায় প্রায় ১০০ জন লোক নিয়ে মামলা করতে বাঁধা দেওয়া হয়েছে, অবশেষে পুলিশের সহযোীতায় রাত পৌনে ৪টায় মামলা দায়ের করি। পরদিন সাদ্দামের নাম মামলা থেকে বাদ দিতে আমাকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ নেতা অনিক। আমার সন্তান হত্যাকারীর নাম আমিই প্রত্যাহার করে নিতে হবে এ কেমন কথা ? সে সময় থানায় উপস্থিত ছিলো শাহজাহান পুলিশ, সাদ্দামের বড় ভাই জাহিদ হাসান ও ছোট ভাই আরিফ। আমি থানা থেকে দৌড়ে স্কুল মাঠে চলে আসলে, সেখান থেকে তারা আবার জোর করে ধরে নিতে চাইলে আমার শালা এসে হুন্ডা দিয়ে আমাকে নিয়ে আসে। তখন আমি একা থাকায় অনেক ভয় পেয়েছি।
ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আ’লীগ ৪ নং ওয়ার্ড সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, শান্ত শান্তর মতোই একটি ছেলে ছিলো, এই ছেলেটাকে আমরা ফতেহাবাদ ইউনিয়ন থেকে হারালাম। শান্তর অপরাধ সে আওয়ামী লীগ করেছে, সে উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতীক (নৌকার) পক্ষে কাজ করেছে। আমরা প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শান্ত হত্যার বিচার চাই।
মহসিন সরকার বলেন, এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। কারন মাদ্রাসার বৈঠকে সিদ্ধান্ত না মানলে গরুর বদলে মানুষ কোরবানী দেয়া হবে বলে আগেই প্রচার করা হয়। যা ঈদের আগের দিন ঘটিয়ে দিল। সাদ্দাম -অনিকের অডিও রেকর্ড সব প্রমান মেলে। আমরা অনিক, সাদ্দাম, আলামিনসহ খুনিদের ফাঁসী চাই।
উল্লেখ্য ‘নূরপুর শাহ ফাতেমি ইবতেদায়ী হাফেজিয়া নূরানী মাদ্রাসা ও এতিমখানার কমিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঈদের আগের দিন বিকেলে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মেহেদী হাসান শান্ত (১৬) নিহত ও অপর ৪ জন আহত হন।
মানবন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, শান্তর পিতা- মোঃ জাকির হোসেন সরকার, মা’ মোসঃ মরিয়ম বিবি, ফতেহাবাদ ইউনিয়ন আ’লীগ ৪ নং ওয়ার্ড সভাপতি মোঃ হুমায়ুন কবির, আ’লীগ নেতা মহসিন সরকার, ইউপি সদস্য মোঃ ইউনুছ প্রমুখ।