দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছে কচুয়া উপজেলার সফিবাদ গ্রামের তিনটি নিরীহ পরিবার। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী কবির হোসেনের স্ত্রী নাজমীন বেগম বাদী হয়ে কচুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কান্নাজনিত কন্ঠে ইব্রাহিম নামের দুই যুবকের পরিবার ও কবির হোসেনের পরিবার নি:স্ব হওয়ার কথা জানান। এ নিয়ে বুধবার দুপুরে ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাদের দ্রুত মুক্তির দাবি করে এবং দালালচক্র খোরশেদ আলম ও তার মেয়ের জামাই রাকিব হোসেনের শাস্তির দাবি করে সফিবাদ গ্রামে ও উত্তর পালাখাল- সিংআড্ডা সড়কে বিক্ষোভ প্রতিবাদ মিছিল করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সফিবাদ গ্রামের ইসমাইল মোল্লার ছেলে ইব্রাহিম, মৃত. আব্দুল জব্বার মোল্লার ছেলে কবির হোসেন ও নুরুল ইসলামের ছেলে ইব্রাহিমকে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে একই গ্রামের আবুল হাসেম খন্দকারের ছেলে খোরশেদ আলম তার মেয়ের জামাই রাকিবের মাধ্যমে প্রতি পরিবার থেকে ৪লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নেয়। চলতি বছরের ১৯ জুলাই ইতালি নেয়ার নামে লিবিয়া নিয়ে যায় তাদের। কিন্তু ওই তিন যুবককে জিম্মি করে প্রত্যেকের পরিবারের কাছ থেকে পরবর্তীতে সহায় সম্পত্তি বিক্রি করে আরো ২লক্ষ টাকা করে হাতিয়ে নেয় দালাল খোরশেদ আলম ও তার জামাই রাকিব হোসেন। একদিকে তাদের জিম্মি অপর দিকে কোন কাজ না দিয়ে নির্যাতন চালিয়ে আসছে বলেও জানান ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। বিষয়টি জানাজানি হলে হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। স্থানীয় ভাবে গত শনিবার খোরশেদ আলমের বাড়িতে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ বৈঠক হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। আটকে থাকা তিন ব্যক্তিকে দেশে ফেরত আনতে প্রশাসনসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন ভূক্তভোগী পরিবারগুলো। এ দিকে ঘটনার সত্যতা জানতে খোরশেদ আলমের বাড়ি বুধবার সফিবাদ গ্রামের বাড়িতে গেলেও তার বাড়ির গেইট বন্ধ পাওয়া যায় এবং পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া খোরশেদ আলমের স্ত্রী তাছলিমা আক্তারের মোবাইলে বারবার ফোন দিলেও তিনি তা রিচিভ করেননি।
ভূক্তভোগী কবির হোসেনের স্ত্রী নাজমীন,ইব্রাহিমের স্ত্রী রোজিনা আক্তার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা জানান, দালাল খোরশেদ আলম ইতালি নেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার স্ত্রী তাছলিমা বেগম,বোন নুরুন নাহার ও বাবা আবুল হাসেমের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়ে ইতালি না নিয়ে ভিন্ন কৌশলে লিবিয়ায় আটকিয়ে রেখে তাদের নির্যাতন করে আসছে এবং তাদেরকে কোনো ধরনের অন্ন ও বস্ত্র না দিয়ে নানান ভাবে কষ্ট দিচ্ছে।
স্থানীয় অধিবাসী চাঁন মিয়া মোল্লা, আনিছুর রহমন, বশির মিয়াজীসহ আরো অনেকে জানান, খোরশেদ আলম ও তার পরিবারকে আটকে রাখাদের বিষয়ে বার বার বলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছিনা। তারা কোন ভাবেই বিষয়টি সমাধান করছেন না এবং কোনো ভাবেই তা আমলে নিচ্ছেন না।
বর্তমানে লিবিয়ায় দলালচক্রের হাতে আটকে থাকা ইব্রাহিম,কবির হোসেন ও ইব্রাহিম কে স্বশরীরে ফেরত পেতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন ভূক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী। পাশাপাশি দালাল খোরশেদ আলম ও স্থানীয় এবং প্রবাসে থাকা তার সহযোগিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানানও তারা।
কচুয়া থানার ওসি মুহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল বলেন, ভূক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। এর প্রেক্ষিতে এসআই মামুনুর রশিদ সরকারকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।