1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. admindailykaljoyi@gmail.com : admindailykaljoyi :
  3. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
তীব্র শীত উপেক্ষা করে বোরো আবাদ নিয়ে ব্যস্ত সৈয়দপুরের কৃষি শ্রমিক
বাংলাদেশ । সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫ ।। ১১ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ
সড়ক পথে প্রতিদিন ঝরেছে ১৫ প্রাণ : সেভ দ্য রোড কুমিল্লায় সাবেক রেলমন্ত্রী মজিবুল হকসহ ১২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা চৌদ্দগ্রামে নারীকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টা হামলাকারী গ্রেফতার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক মানোন্নয়নে সমন্বিত প্রচেষ্টা জরুরি : সেতু সচিব চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ৭৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা নীলফামারীতে অনলাইন ভিসা প্রতারক চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার র‍্যাব পরিচয়ে সিএনজি ছিনতাই জিপিএস ট্র্যাকিংয়ে ছিনতাইকারী গ্রেফতার ডিমলায় ৯ মাসের অন্ত:সত্বা নারীসহ ২ জনের লাশ উদ্ধার স্ত্রীর ডিভোর্স লেটার পেয়ে স্বামীর আত্মহত্যা মিথ্যে মামলায় আসামী করায় হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু

তীব্র শীত উপেক্ষা করে বোরো আবাদ নিয়ে ব্যস্ত সৈয়দপুরের কৃষি শ্রমিক

শাহজাহান আলী মনন:
  • প্রকাশিত: সোমবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ৭৭৩ বার পড়েছে
এভাবেই কৃষকরা ফসল ফলায়

নীলফামারীর সৈয়দপুরে গত ৩ দিন থেকে চলমান শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারনে সৃষ্ট তীব্র শীতকে উপেক্ষা করেই কৃষি শ্রমিকরা ব্যস্ত চলতি বোরোধান আবাদ নিয়ে। সারাদিন সূর্যের মুখ দেখা না গেলেও মাঠে মাঠে তাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত।

কুয়াশাচ্ছন্ন অবস্থার মধ্যেও সেই কাকডাকা ভোরেই ছুটছেন বীজতলা থেকে রোপনের জন্য চারা সংগ্রহ করতে। এরপর তা নিয়ে তারা নামছেন কাদাপানিতে ভরা ফসলের মাঠে। কেউবা চারা রোপনের জন্য জমি তৈরী করতে লাঙল, মই নিয়ে চাষ করছেন। কেউবা তৈরী জমিতে চারা রোপন করছেন। কোথাও আবার দেখা যায় পানি সেচের দৃৃৃৃশ্য।

কৃষকদের শ্রমের কারনে দেশ টিকে আছে

কৃষি প্রযুক্তির উন্নতির ফলে নানা কৃষি উপকরণের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষাবাদ সহজ ও সুবিধাজনক হওয়ায় কৃষি শ্রমিকদের পরিশ্রম কমলেও বৈরী আবহাওয়ায় কষ্ট অপরিসীম।তাছাড়া সবার পক্ষে বেশী অর্থ ব্যায় করে প্রযুক্তি সহায়তা নেয়া সম্ভব হয়না।
তাই তারা যান্ত্রিক লাঙ্গল ও সেচপাম্পের পরিবর্তে আবহমান বাংলার প্রচলিত পদ্ধতিতে চাষ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা গরুর সাহায্যে লাঙল, মই দিয়ে জমি চাষ এবং চাঙ্গাড়ি দিয়ে পানি সেচের কাজ করছেন। এই প্রচন্ড শীতে তারা কৃষিকাজ করতে গিয়ে অবর্ণনীয় কষ্ট করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের মুশরত ধুলিয়া ময়দানপুর এলাকায় কনকনে শৈত্য প্রবাহের মধ্যেই কাদাপানিতে নেমে গরু ও মই দিয়ে জমির মাটি সমান করছেন মধ্যবয়সী এক ব্যাক্তি। পুরো মাঠ জুড়ে প্রায় অর্ধেক জমিতে ইতোমধ্যে চারা রোপন করা হয়েছে। বাকি জমিগুলোতে চলছে রোপনের প্রস্তুতি। দিগন্ত জোড়া বিস্তির্ণ ফসলের ক্ষেতে কোন পশুপাখি না থাকলেও তার মত কৃষি শ্রমিকরা ঠিকই কাজে নিয়োজিত।

আব্দুল লতিফ নামের ওই কৃষি শ্রমিক জানান, জমি চাষের মেশিন হওয়ায় এখন আর কেউ গরুর লাঙ্ল বা মই ব্যবহার করেনা। ফলে যন্ত্র লাঙ্গল চালাতে না পারায় আমাদের কাজ কমে গেছে। তারপরও কম জমির মালিক ও স্বল্প আয়ের গৃহস্তরা এখনও গরুর লাঙল দিয়ে চাষ করান। তাই কাজ পাওয়ামাত্রই করি। রোদ, বৃষ্টি বা শীত নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ নাই। কেননা এছাড়াতো এসময় অন্যকাজও পাবনা।

আর কাজ না পাইলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। বাধ্য হয়ে জারত (শীত) কাঁপতে কাঁপতেই মই দেইছি। এই কামটা করলে ৩শ’ টাকা পাবো। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন লাঙল-মই দেয়া, বেচন (ধানের চারা) গাড়া (লাগানো) এই কামগুলাই চলবে। আমাদেরও কৃষিকাজ করেই চলতে হবে। তাই হাজার কষ্ট হলেও করতেছি।

কিছুদূর এগিয়ে কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়ার ডাঙ্গায় গিয়েও একই রকম দৃশ্য চোখে পড়ে। ইউনিয়নের প্রধান সড়কের পাশেই সদ্য প্রস্তুতকৃত একটি জমিতে ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত ৭ জন কৃষি শ্রমিক। তাদের মধ্যে আসগার আলী নামের একজন জানান, গত কয়েকদিন থেকে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় অনেক অসুবিধা হয়েছে। ঠান্ডায় জবুথবু হয়েও কাজ করতে হচ্ছে।

উপায় নেই। কারণ, এখনই বোরোধান রোপনের সময়। আর ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যেই চারা রোপন শেষ করতে হবে। তা না হলে ধানের ভালো ফলন পাওয়া যাবেনা। তাই জমির মালিকেরা যত দ্রুত সম্ভব চারা রোপন সম্পন্ন করতে চায়। এজন্য তাদেরকে কাজে লাগিয়েছে। কষ্ট হলেও কাজ করে যা আয় হবে তা দিয়ে সংসার চালাতে হবে। শীত দেখে আমরা কাজ না করলে অন্য কেউ করবে। আমি না করলে আমারই লস।

ফেরাজ উদ্দীন নামে একজন বলেন, আমরা কৃষি শ্রমিকরা সব ধরনের প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে কাজ করি বলেই দেশ দিন দিন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। কৃষি প্রধান বাংলাদেশের কৃষকরাই মূল চালিকাশক্তি। কিন্তু এই কৃষি শ্রমিকরাই সবচেয়ে বেশি অবহেলিত।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এই শীতে অনেকেই গরম কাপড় পাইলেও আমাদের ভাগ্যে জোটেনি। দিনভর ক্ষেতে কাজ করে কষ্ট পাই। আবার রাতে গরম কাপড়ের অভাবে ভোগান্তি পোহাতে হয়। সবার ভাগ্যের পরিবর্তন হলেও কৃষি শ্রমিকের কোন উন্নয়ন হয়না। শীতে কাজ করার জন্য যে মজুরি বেশি পাবো তাও নয়। বরং কৃষিযন্ত্রের কারনে আমাদের কদর কমে গেছে।

একারনে মাঝে মাঝে কাজ না পেয়ে অনাহারে অর্ধাহারে থাকতে হয়। বিভিন্ন শিল্প কারখানায় সরকারী প্রণোদনার ব্যবস্থা থাকলেও সবচেয়ে বড় সেক্টর কৃষি তথা এদেশের কৃষি শ্রমিকদের জন্য কোন বিশেষ বরাদ্দ নাই। অথচ এক্ষেত্রেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অধিক নজর দেয়া উচিত।

একইভাবে দুঃখপ্রকাশ করেন ক্ষেত থেকে আলু তোলার কাজে নিযুক্ত বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের শ্বাষকান্দর কাঙ্গালপাড়ার নারী শ্রমিক ময়না বেগম। দেশের সব পেশার শ্রমিকরাই মজুরী বৃদ্ধির সুবিধাসহ উৎসব উপলক্ষে বাড়তি অর্থ আয় করে। কিন্তু কৃষি শ্রমিকদের এধরনের কোন সুযোগই নাই।

তিনি বলেন, সারাবছর যেভাবে নামকাওয়াস্তা মজুরী মিলে মৌসুমকালেও তাই। এখন বোরোধান গাড়াসহ আলুতোলা আর ভুট্টা ও তামাকের ক্ষেতে নিড়ানির কাজ করছি। সরিষা, গম বা রসুন, পিয়াজের ক্ষেতে তেমন কোন কাজ নাই। এরপর শুরু হবে ধান নিড়ানি। কিন্তু সবসময় কাজ না থাকায় অনেক সময় না খেয়ে দিন কাটে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD