দীর্ঘ ১৮ মাস পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হয়েছে দেশজুড়ে।করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় হাঁপিয়ে ওঠেছিলো শিক্ষার্থীরা।দীর্ঘ বিরতির পর একটুখানি ক্রীড়া বিনোদন উপভোগ করার মতো পরিবেশ নেই সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।একমাত্র খেলার মাঠটি এখন কাটা পাথর,রড আর বালিতে ভরপুর।
দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের পাশঘিরে রঘারখালে ব্রিজের নির্মাণকাজ অব্যাহত থাকায় বিকল্প ব্যবস্থায় খাল পেরিয়ে সব ধরনের যানাবাহন চলাচল করছিল ওই মাঠের ভিতর দিয়েই।এতে মাঠজুড়ে খানাখন্দ ছাড়াও ব্রিজের নির্মাণ সামগ্রী রাখায় ভূঁতুড়ে পরিবেশে ক্রীড়া বিনোদনের কোনো আমেজ নেই বললেই চলে।
জানা যায়,আশপাশের ৭-৮টি গ্রামের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষার একমাত্র ভরসা নরসিংপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত ওই বিদ্যালয়ে বর্তমানে ৬শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে।শিক্ষক রয়েছেন ৫জন।শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান,পরীক্ষার ফলাফল অর্জনের দিক দিয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে বিদ্যালয়টি।
বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা আজ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব পালন করছে।অনেকে শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন হাতেখড়ি নিয়ে গড়ে ওঠা প্রাচীন ওেই বিদ্যাপিঠে।কিন্তু পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা থেকে আজ বঞ্চিত রয়েছে বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা।
অধ্যয়ণরত পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আরিফ আহমেদ জানায়,মাঠে পাথরের কনা আর কাটা রড রাখায় আমরা খেলাধুলা করতে পারিনা।ক্লাস শুরুর আগেপিছে বা বিরতিতে শুধু বসে বসে সময় কাটাই।স্থানীয় বাসিন্দা ফখর উদ্দিন বলেন,খেলার মাঠে কাটা পাথর, রড আর বালির স্তুপ।স্কুল খোলার পর থেকে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করাতো দূরের কথা,নিরাপদে চলাচলই করতে পারছেনা।
এতে শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে ব্যাঘাত ঘটছে।মাঠ থেকে ব্রিজ নির্মানের সামগ্রী সরিয়ে দ্রুত মাঠটি ভরাট করে খেলাধুলার উপযোগী করা জরুরী।আওয়ামীলীগ নেতা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি মনোয়ার আলী মনর বলেন, কয়েকদিন আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরেজমিন তদন্ত করে বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাঠি ভরাট করে দিব-দিচ্ছি বলে শুধু আশ্বস্তই করছেন।দ্রুত এসব মালামাল সরিয়ে মাঠ ভরাটের দাবি জানাই।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আয়েশা আক্তার বলেন, স্কুল বন্ধের পর থেকে কাটা পাথর,বালি আর রডসহ ব্রিজ নির্মানের সামগ্রীতে মাঠ পরিপূর্ণ।অপরদিকেযানাবাহন চলাচল করায় মাঠজুড়ে গর্ত আর খানাখন্দ।
মাঠ ভরাট করার মতো পর্যাপ্ত আর্থিক ফান্ড আমাদের নেই।দ্রুত মাঠ ভরাটের দাবি জানাই।উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পঞ্চানন কুমার সানা বলেন,গত মাসে এক সভায় ইউএনও স্যারের উপস্থিতিতে বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালামাল সরিয়ে মাটি ভরাটের জন্য বলা হলেওে এখনও কাজ হয়নি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মিলন বাবু বলেন,স্কুল বন্ধ থাকাকালীন কাটা পাথর,রড ও বিভিন্ন সামগ্রী সেখানে ছিলো সত্য।তবে প্রতিষ্ঠান খোলার আগেই মালামাল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।মাঠে এখন আমাদের কিছু নেই।তার পরেও ইউএনও স্যার ও উপজেলা শিক্ষাঅফিসারের উপস্থিতিতে নরসিংপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালেয় মাঠে মাটি ভরাটের জন্য ১০ হাজার টাকা দিতে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছি।বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির প্রয়োজনমতো পরিশোধ করবো।