ঝালকাঠি সুগন্ধা নদীর তীরে ধ্বংসাবশেষের মাঝে ঠায় দাড়িয়ে থাকা ঘোষাল রাজার কাচারি বাড়িটি এখন শুধুই কালের সাক্ষী। এখান থেকেই আধুনিক ঝালকাঠির উন্নয়ন ও উচ্চ শিক্ষার প্রসার লাভ করে। ঝালকাঠি শহরে পরিকল্পিত নগরায়ন, শহরের অবকাঠামোর উন্নয়নে ঘোষাল রাজাদের জুড়ি নেই। রাজা সত্য স্মরণ ঘোষাল ঝালকাঠি শহরে প্রশস্ত সড়ক, সুউচ্চ অট্টালিকা, পয়ঃনিস্কাশনসহ সুপেয় পানির ব্যবস্থা করে ছিলেন। পরবর্তীতে এই কাচারি বাড়িতেই উচ্চ শিক্ষার প্রসারের জন্য ঝালকাঠি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু সেই ঘোষাল রাজার বাড়ি এখন অযত্ন অবহেলায় বিলুপ্তির পথে।
ঝালকাঠি শহরের কলেজ খেয়াঘাট সংলগ্ন সুগন্ধা নদীর তীরবর্তী জেলেপাড়ায় ধ্বংসস্তুপের মাঝে দাড়িয়ে থেকে ইতিহাসের সাক্ষি বহন করছে ঘোষাল রাজার কাচারি বাড়ি। ঠিক কখন থেকে ঘোষালরা এখানে জমিদারি শুরু করেছিলেন তাঁর সঠিক তথ্য জানা যায়নি। তবে ১৭৮১ সালে ঘোষাল রাজা ঝালকাঠি শহর প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের সময় ঘোষাল রাজার পরিবার দেশ ছেড়ে চলে যান। ঘোষাল রাজাদের সেই জমিদারি কাচারিতে ১৯৬৪ সালে ঝালকাঠি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন স্বনামধনন্য চিকিৎসক এ জামান। ১৯৮০ সালে একটি ভবনসহ কলেজের অর্ধেক সুগন্ধা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। সেই বছর কলেজটি জাতীয়করণ হলে বর্তমান বিশ্ব রোডের পাশে কলেজটি নতুন করে স্থাপন করা হয়। বর্তমানে নদীর পাড়ের সেই ঘোষালদের কাচারি বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে শ্রী শ্রী রক্ত কমলেশ্বর শিব ঠাকুর ও ভূ-কৈলাশ দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির উচ্চ আদালতে একটি মামলা চলমান রয়েছে। বর্তমানের ৮/১০টি ভূমিহীন পরিবার সেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের আসপাশে ঘর তৈরী করে বসবাস করছেন। এদিকে ঝালকাঠির প্রাচীন ঐতিহ্য ঘোষাল রাজার বাড়িটি সংরক্ষন করার দআব জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, মামলা থাকার কারনে ঘোষাল রাজার বাড়ি প্রত্নতত্ত বিভাগকে দেয়া যাচ্ছেনা। বর্তমানে ঘোষাল রাজার মূল ভবনটির জমি রয়েছে ১ একর। নদীতে প্রায় সাড়ে ৩ একর সম্পত্তি বিলীন হয়ে গেছে। ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো: জোহর আলী বলেছেন, ঘোষাল রাজাদের কাচারি বাড়ি নিয়ে স্থানীয়দের সাথে কলেজ কর্তৃপক্ষের মামলা থাকায় এখানে সংস্কার কাজ করা যাচ্ছেনা। তবে মামলা জটিলতা কেটে গলে ঘোষাল রাজার বাড়ি সংরক্ষেনের উদ্যোগ নেয়া হবে।