সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে বেসরকারী সংস্থা কারিতাসের কার্যক্রম নিয়ে এলাকায় স্থানীয়দের মাঝে গুঞ্জন চলছে। জামালগঞ্জে বেসরকারী সংস্থা কারিতাস প্রকল্প বেশ কয়েক বছর ধরে কার্যালয় নিয়ে জামালগঞ্জে থাকলেও তাদের কোন কাজ চোখে পড়ার মতো নয়। বুধবার কারিতাসের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন অনুষ্টিত হয় উপজেলার শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে। প্রায় দুপুর ১২ টায় অনুষ্ঠান ঘুরে দেখা যায় খালি মঞ্চে একটি ব্যানার টানানো রয়েছে। এতে অতিথিদের নাম লিখা রয়েছে ও সিলেট অঞ্চলের আয়োজনে অনুষ্টানে সভাপতিত্ব করেন কারিতাস সিলেট আঞ্চলিক পরিচালক বনিফাস খংলা।
তাদের লিফলেটে বিভিন্ন কর্মর্মকান্ড উল্লেখ করলেও জামালগঞ্জ উপজেলার কিছু এলাকা ঘুরে এর তেমন চিত্র পাওয়া যায়নি। জামালগঞ্জে স্থানীয় সাংবাদিকদের পাশ কাটিয়ে কারিতাসের সুবর্ণ জয়ন্তীর উদযাপন অনুষ্ঠান করায় বিষয়টি নিয়ে সুধী সমাজ ও স্থানীয় সাংবাদিকদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। জামালগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অঞ্জন পুরকায়স্থ, একাংশের সভাপতি আব্দুল আহাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ ও হাবিবুর রহমান, শাহীন আলমসহ উপজেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সিনিয়র আরো সাংবাদিকদের পাশ কাটিয়ে প্রেসক্লাবের বিতর্কিত কথিত একাংশের ভুয়া কমিটির ভুয়া সভাপতি পরিচয় দানকারী জামালগঞ্জ উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ালী উল্লাহ কে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
জামালগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অঞ্জন পুরকায়স্থ বলেন, পূর্বে জনস্বার্থে এনজিওদের কার্যক্রমে জনগনের কাছে জবাব দিহিতা ছিল। এখন আর আগের মতো জবাব দিহিতা নেই। জামালগঞ্জে কারিতাস তাদের কার্যক্রম লুকুচুরি করার জন্যই জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকার প্রতিনিধিদের পাশ কাটিয়ে সুবর্ণ জয়ন্তির মত একটি বিশেষ অনুষ্ঠান পালন করেছে। এ বিষয়টি এখন স্থানীয় সাংবাদিক ও সুধি সমাজের কাছে প্রশ্ন বিদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠিাতা ও বর্তমান সভাপতি আ: আহাদ বলেন, কারিতাস সংস্থাটি পুরাতন হলেও জামালগঞ্জে কারিতাসের দায়ীত্বশীল ও মাঠকর্মীরা তাদের কর্মপরিধি ঠিক রাখছেন বলে আমার মনে হয়না।
কারণ, যদি তারা জনস্বার্থে কাজ করতো তাহলে তাদের কার্যক্রম নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করতেন। জামালগঞ্জে তাদের মতো বেশ কয়েকটি সংস্থা থাকলেও কোন কোন সংস্থা সাংবাদিকদের নিয়ে তাদের কর্যক্রমে মতবিনিময় করেন। কারিতাসের লুকুচুরি সুবর্ণ জয়ন্তি অনুষ্ঠানে তাদের অনুগত এক-দুইজন ছাড়া স্থানীয় সাংবাদিকদের অবহিত না করাই তার প্রাথমিক প্রমান। আরো বেশ ক’জন সাংবাদিক আমার কথায় একমত পোষণ করে তার ক্ষোব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ বলেন, কারিতাস উপজেলার কোথায় কি কাজ করছে এ ব্যাপারে তাদের কোন স্বচ্চতা আছে বলে আমার মনে হয়না।
যদি সচ্চতা থাকতো তা হলে সব সাংবাদিকদের ডেকে তাদের কর্ম পরিধি জানাতো। এখন তারা স্থানীয় সাংবাদিকদের পাশ কাটিয়ে অনুগত এক-দুইজন কে নিয়ে সম্মানীর মাধ্যমে তাদের পক্ষে নিউজ করান। এলাকার উন্নয়নে তাদের কাজের মান পর্যবেক্ষণ না করেই নগদ পেয়েই কেউ কেউ নিউজে তাদের গুণ কীর্তন করছে। যার প্রমান তাদের সুবর্ণ জয়ন্তি অনুষ্ঠানেও স্থানীয় সাংবাদিকরা জানেন না। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান (যুগান্তর প্রতিনিধি) বলেন, কারিতাস লুকুচুরি করে উপজেলায় কি করছে তা এখন খুঁজ নেয়া প্রয়োজন।
স্থানীয় সাংবাদিকদের পাশ কাটিয়ে অনুগত সংবাদকর্মী দিয়ে নিউজ করালেই বাহ বাহ হয়ে যায় না। ভালো কাজ করতে হলে সকলকে নিয়েই করতে হয়। প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি শাহীন আলম বলেন, জামালগঞ্জে কারিতাসের দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করছে না। তাদের কার্যক্রম কি তা এখনো সাংবাদিকদের জানানো হয়নি। স্বচ্চতা ও জবাব দিহিতা ঠিক থাকলে প্রথমেই কারিতাস স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে তাদের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করতো।
সুবর্ণ জয়ন্তির মতো এমন একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের পাশ কাটিয়ে কথিত বির্তকিত ও অনুগত এক-দুই জনকে নিয়ে অনুষ্ঠান করায় বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকদের ও সুধি সমাজে সমালোচনা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলার কারিতাসের ম্যানেজার ডেন্সিল পডুয়েং কে জানতে তার মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। কারিতাস সিলেট আঞ্চলিক পরিচালক বনিফাস খংলা মুঠোফোনে বলেন, সকল সাংবাদিকদের জানানো উচিত ছিল, তবুও আমি বিষয়টি আমি খুঁজ নিচ্ছি।