চট্টগ্রামে পিছিয়ে পড়া বেদে সম্প্রদায়কে প্রথমবারের মতো কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হয়েছে। আজ ২৫ নভেম্বর ২০২১ ইংরেজি বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর মনসুরাবাদস্থ বেদে পল্লীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভ্যাকসিন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। প্রথম দিন প্রায় ২’শ বেদে জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে।
ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আসিফ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এসআইএমও ডা. এফ.এম জাহেদুল ইসলাম, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়–য়া, হেলথ এডুকেটর প্রবীর মিত্র ও নবজাগরণ হিজড়া শ্রমজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ফাল্গুনী হিজড়া।
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, হিজড়া ও বেদে সম্প্রদায়সহ পিছিয়ে থাকা অন্যান্য জনগোষ্ঠীদের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলেও তারা আমাদের সমাজেরই মানুষ। সুরক্ষা অ্যাপসের মাধ্যমে তারা ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না। তাদেরকে বাদ দিয়ে আমরা সুরক্ষিত থাকতে পারিনা। তাই সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আমরা বেদে ও হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে পেরেছি।
এভাবে পিছিয়ে পড়া সমাজের অন্যান্য জনগোষ্ঠীকেও ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে। এর আগে গত ২২ নভেম্বর সোমবার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে প্রথম পর্যায়ে প্রায় সাড়ে ৩’শ তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া জনগোষ্ঠী) ও আজ ২৫ নভেম্বর বৃহস্পতিবার প্রায় ২’শ বেদে জনগোষ্ঠীকে কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে হিজড়া ও বেদে জনগোষ্ঠীর মাঝে ভ্যাকসিন প্রদান চট্টগ্রামে এটাই প্রথম।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে এটিই প্রথম পদক্ষেপ। বেদে ও হিজড়াসহ কোন জনগোষ্ঠীই যাতে ভ্যাকসিন কার্যক্রমের আওতার বাইরে না থাকে সে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছেন স্বাস্থ্য বিভাগ। নিবন্ধনের ঝামেলা ছাড়াই ভ্যাকসিন নিতে পেরে বেদে জনগোষ্ঠী মহাখুশী। যে শ্রেণির মানুষ কিংবা লিঙ্গের হোক না কেন কেউ এ কার্যক্রম থেকে বাদ যাবেনা, পর্যায়ক্রমে সবাইকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে বলে মন্তব্য করেন সিভিল সার্জন।
ভ্যাকসিন নিতে আসা বেদে সম্প্রদায়ের বুবলি ও তাহিরুণ স্বাস্থ্য বিভাগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, নিবন্ধনসহ বিভিন্ন কারণে আমরা এতদিন কোভিড ভ্যাকসিন নিতে পারিনি। নবজাগরণ হিজড়া শ্রমজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ফাল্গুনী হিজড়ার সহযোগিতায় স্বাস্থ্য বিভাগের আন্তরিকতায় অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পেরেছি। এতে আমরা অত্যন্ত খুশী।