কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার রামকৃঞ্চপুর ও চিলমারি ইউনিয়নে পদ্মার চরের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নীচে ও চরের প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
এখন পর্যন্ত পানিবন্দি মানুষকে সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোনো ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়নি।সরেজমিন দেখা যায়, সেখানে চিলমারী ও রামকৃঞ্চপুর চরের ১০০’শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছেন। তাদের মতো আরও ৮টি চরের একই অবস্থা। যাতায়াতের একমাত্র ব্যবস্থা হচ্ছে টিনের ডিঙি নৌকা। এসব এলাকার আশপাশে বাজার না থাকায় দূরে বাজার করতে যেতে হয় এভাবেই চলছেন তারা। এখানকার মানুষের আয়ের প্রধান উৎস কৃষিকাজ। এমন পরিস্থিতিতে চারদিকে পানি উঠে জমির ফসল ডুবে গেছে তাদের। তবে তাদের অনেকেই জীবিকার তাগিদে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন।
এসব চরের মধ্যে প্রায় প্রতিটি পরিবারই অন্যের জমি বার্ষিক ভাড়া নিয়ে বাড়ি করে বসবাস করেন। সেখানকার বাসিন্দা জিল্লুর রহমান জানান, স্ত্রী ও তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে জমি ভাড়ায় দুটি ঘর তৈরি করে থাকেন তিনি। পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ছাগল ও গরু নিয়ে বিপদে পড়েছেন তিনি। তার রোকেয়া বেগম জানান, কৃষিকাজ না থাকায় জাল দিয়ে মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে পাওয়া টাকা দিয়েই কোনো রকমে সংসার চলছে তাদের। সরকারি বা বেসরকারি কোনো ত্রাণ তাদের দেওয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ জানান, পদ্মার চরের মানুষের ৬০ শতাংশ জমির ফসল পানির নিচে তলিয়েছে। তারা গরু-ছাগল নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এখন পর্যন্ত তাদের সরকারি বা বেসরকারি ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়নি। এ বিষযটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আকষ্মিক বন্যায় চরাঞ্চলের ঘর-বাড়ি বন্যা কবলিত হওয়ার বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জানান, মঙ্গলবার সকালে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলে বন্যার পানি ঢোকার খবর পেয়ে তিনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ একটি টিম উপদ্রুত এলাকায় পাঠিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ তৎপরতা সহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে অচিরেই রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।