পদ্মা পাড়ের উপজেলা কুষ্টিয়ার দৌলতপুর।উপজেলার দুটি ইউনিয়নে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে অন্তত ২০টি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ৫টি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।ফলে করোনাভাইরাস অতিমারি কাটিয়ে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খোলার ঘোষণা এলেও পানি না নামা পর্যন্ত এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চালু করা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে,এই উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২১৭টি,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০২টি এবং মাদরাসা রয়েছে ১৫টি।বন্যার পানিতে বেশ কিছু প্রাথমিক,মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সরদার মোঃ আবু সালেক জানান,করোনাভাইরাস অতিমারির কারনে দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা লেখা পড়ায় অনেক পিছিয়ে আছে,সামনে এস,এস,সি পরিক্ষার কারনে একটু কষ্ট স্বীকার করে হলেও শ্রেনীকক্ষে এসে নতুন উদ্যমে পড়া লেখার কাজ শুরু করতে হবে যাতে পেছনের ক্ষতি পুশিয়ে নেওয়া যায়।চরাঞ্চলের দুটি ইউনিয়নে ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১টি মাদ্রাসা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদা সিদ্দিকা জানান,উপজেলার দুটি ইউনিয়নে চরাঞ্চলের ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এখন পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে।এসব বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ ও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে পানি না নামা পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম ব্যহত হবে।তবুও কষ্ট করে হলেও শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে যাবেন।পরবর্তীতে শিক্ষার সব কার্যক্রম জোরদার করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
আগামী ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খোলার ঘোষনায় দুশ্চিনায় আছেন অভিভাবকরাও এমনই এক অভিভাবক জোতাশাহী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া ৮ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী হাওয়া খাতুনের বাবা আনোয়ার আলী খান জানান,বাড়ী থেকে স্কুলের দূরত্ব প্রায় ১ কিঃমিঃ চারিদিকে পানি নৌকা ছাড়া কোন বাহন নাই যে তাতে করে স্কুলে যাবে এমতাবস্তায় মেয়ের স্কুলে যাওয়া নিয়ে কঠিন দুশ্চিন্তায় আছেন।
এ বিষয়ে ইনসাফ নগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন,পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে।এর মধ্যেও আমরা প্রতিষ্ঠান খোলার ও ক্লাশে পাঠদানের প্রস্তুতি নিচ্ছি।তবে অবস্থা আরো ভয়াবহ হলে ক্লাশে পাঠদান সম্ভব নাও হতে পারে।জোতাশাহী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামুল হক বলেন,আশপাশের বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হওয়া কঠিন হয়ে যাবে।
বন্যার পানি কমে গেলেও রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি থেকে পানি না নামা পর্যন্ত শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি মনে করেন।দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন,বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি।নিয়মিত বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করছি।এছাড়াও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে খোঁজখবর রাখছি।পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আলোচনা করে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।