কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ইছাপুরা গ্রামের একটি বাড়ি থেকে পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে শরীফুল ইসলাম (২৮) ও ফয়েজ আহমেদ (১৮) নামের দু’জনের হত্যাকান্ডের ঘটনায় শরীফুলের পিতা হাসানুজ্জামান বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী উল্লেখ করে হত্যা ও ডাকাতির মামলা রুজু করেছেন। এদিকে গতকাল বুধবার বিকেলে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ইছাপুরা গ্রাম পরিদর্শন করে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে দ্রুত আসামীদের গ্রেফতারসহ আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন। নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সুত্র জানায়, জেলার লালমাই উপজেলার বেলঘর উত্তর ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের হাসানুজ্জামানের পুত্র গরুর খামারি ও স্থানীয় মুদি দোকানদার শরীফুল ইসলাম ও তার দোকানের কর্মচারী, স্থানীয় একটি মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার্থী একই গ্রামের আবুল হাশেমের পুত্র ফয়েজ আহমেদ, গত ২৬ এপ্রিল সোমবার শরিফুলের ঘরে একটি কক্ষে ঘুমিয়ে যায়। রাতের কোন এক সময় ঘাতকরা ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে শরীফুলকে গলা কেটে এবং ফয়েজকে মেরে রশি দিয়ে গলা বেঁধে ঘরের তীরের সাথে ঝুলিয়ে রাখে।
গত মঙ্গলবার প্রতিবেশীরা দোকান বন্ধ দেখে বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করেও কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে জানালার ফাঁক দিয়ে লাশ দেখতে পায়। এসময় চিৎকার করলে গ্রামবাসী জড়ো হয়। পরে পুলিশে খবর দিলে দুপুর আনুমানিক দু’টায় লালমাই থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। একই সময় কুমিল্লা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানভীর আহমেদ,সদর দক্ষিণ সার্কেল প্রশান্ত পাল, লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আইয়ুব,পিবিআই ইন্সপেক্টর শফিকসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এমুহুর্তে হত্যার কারন বলা যাচ্ছেনা, বিষয়টি তদন্তনাধীন । এদিকে নিহতের পিতা হাসানুজ্জামান সহ স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রামবাসী জানান, শরীফুল মুদি দোকানের পাশাপাশি গরু লালনপালন করতেন।
সম্প্রতি শেষ হওয়া কোরবানীতে গরু বিক্রি করতে ঈদের ৩ দিন আগে চট্টগ্রামে প্রায় ১২ লাখ টাকার গরু বিক্রি করে বাড়িতে ফিরে আসেন,আর এসব টাকাই ঘরে রক্ষিত ছিল। ঈদের পরে শরীফুলের বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজন তার নানা বাড়িতে বেড়াতে গেলে বাড়িতে শুধুমাত্র তিনি (শরীফুল) ও তার কর্মচারী ফয়েজ ছিল। ঘাতকরা টাকা লুটের জন্য এসেছিল বলে তার পিতা আরো বলেন, হয়তো শরীফুল ও ফয়েজ তাদের চিনে ফেলায় হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। এব্যাপারে নিহত শরীফুলের পিতা হাসানুজ্জামান বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতেই অজ্ঞাত আসামী উল্লেখ করে হত্যা ও ডাকাতির দুটি মামলা রুজু করেছেন। এদিকে গতকাল বুধবার বিকেলে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার নিহতদেদর গ্রামে গিয়ে পরিবারের সাথে কথা বলে দ্রুত ঘাতকদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন।