1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
উপন্যাস: স্বপ্নীল হাসি
বাংলাদেশ । সোমবার, ০৬ মে ২০২৪ ।। ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
ব্রেকিং নিউজ
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবিতে ইবি ছাত্রলীগের বিক্ষোভ মিছিল সন্ধ্যা নামলেই এলইডির তিব্র আলো ঘটছে দুর্ঘটনা : চোখের মারাত্মক ক্ষতি শিলাবৃষ্টিতে দোয়ারাবাজারে সহস্রাধিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত!! ব্রিজ পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেই; জনগণের ভোগান্তি চরমে! ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে অতিষ্ট দৌলতপুরের মানুষ! রেলক্রসিংয়ে গেটকিপার ঘুমিয়ে, অল্পের জন্য রক্ষা পেল দুটি ট্রাকসহ পথচারী চুরি হলো সেই শহীদ ভারতীয় মিত্র বাহিনীর অরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভে দোয়ারাবাজারে কলেজছাত্রী তমা হত্যার খুনি লিটনের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল ডাঃ তাহসীন বাহার সুচনার বিজয়ে কুমিল্লার লন্ডন প্রবাসীদের ইফতার ও মিষ্টি বিতরন এক মিনিটে ৮টি ক্রিম বিস্কুট খেয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড এ আবেদন ।

উপন্যাস: স্বপ্নীল হাসি

উপন্যাসিক: মোঃ নূরুল আলম (আবির)
  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১
  • ৪১৩ বার পড়েছে
উপন্যাস স্বপ্নীল হাসি

১ম পর্ব প্রকাশ: ২০১৯ বইমেলা

চাচা গফুর মিয়ার মেয়ের নাম শাহিনা কাজল হাসি। সবাই তাকে হাসি বলেই ডাকে। গাঁয়ের পথ-ঘাটে সাদামাঠা পরিচিতি তার। সে নবম শ্রেণিতে পড়ে। মেধাবী ছাত্রী। স্কুলের ফার্স্ট গার্ল। মোটেও অভিমানী এবং অহংকারী নয় মেয়েটি। মাঝে মধ্যে তার সাথে আমার কথা হয়। দেখলেই সালাম জানিয়ে ভালমন্দ জিজ্ঞাসা করে আর মেঠো সুরে হাসে। আমি বলি— হাসি, তোর সবকিছুই সুন্দর; তবে তোর হাসিটা একটু বেশি সুন্দর। একথা শুনলে সে আরও বেশি খুশি মেখে হাসে। তখন আর তার প্রশংসা করা সম্ভব হয় না। আমি নিজেই তখন তার হাসির ঝলকে— হতভম্ব হয়ে যাই।
হাসির দু’টি ছিকন লাল অধর। তার মাঝখানে সাদা ছোট দাঁতগুলো দারুণ খেলা করে। সে খেলার আনন্দ হয়ত খেলোয়াড় নিজেও বুঝতে পারে না। আমি কিন্তু বুঝতে পারি সহজেই। আকাশের নীলের ছটা যেমন সবার কাছে গোপন নয়, ঠিক তেমনি ওর সৌন্দর্যও আমার কাছে ফুলের মত প্রস্ফুটিত। ফুলের অপরূপ আকর্ষণকে যেমন এড়ানো যায় না, তেমনি তার মায়ারূপের বাহার ভুলে যাওয়া যায় না। তাকে বারবার মনে পড়ে। তার অনুভব হৃদয়ে জেগে রয় অপরূপ সৌন্দর্য হয়ে।

ওর চেহারা চাঁদের মত গোল। সব সময়ই সে চাঁদের রূপালী হাসি জড়িয়ে রাখে চোখেমুখে। ওর বাম গণ্ডদেশে একটি কালো তিল। চাঁদের যেমন কলঙ্ক আছে, তার বিপরীতে সে সৌন্দর্যের অলংকার জড়িয়েছে। কপালে সে যখন নীল টিপ পরে, তখন আর তার থেকে চোখ ফেরানো যায় না। একদিন তাকে বললাম, তুই কপালে নীল টিপ পরস কেন? সে শুধুই হাসে, হয়ত রহস্য না জেনেই।

এইযে একটি গোলাপের কলি। কলিতেই সে এত সুন্দর! আর যখন সে প্রস্ফুটিত হবে, তখন তার সৌন্দর্যের ছটা কেমন হবে? আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। আমি তো বর্তমান সম্পর্কেই পুরোপুরি অবহিত নই। ভবিষ্যতের আলোর নাচন আর খুশির ফোয়ারা কিভাবে সংজ্ঞায়িত করি? তবে এটুকু বলে দিতে পারি, সে নিশ্চয়ই চাঁদের হাসি আর ফুলের সুবাসকে পরাজিত করবেই। তার আলোয় দেশ ও জাতি আলোকিত হবে।

আমি যদি বলি তার মত এত সুন্দর ও সম্ভাবনাময় ফুলকে ফুটতেই দেয়া হবে না। তাকে কলিতেই ঝরে যেতে হবে। তাহলে আপনি আমাকে মারতে আসবেন। আমারও শুধু শুধু মাইর খাওয়ার শখ নেই। তাই আসল কথাটা বলেই ফেলি-

হাসির বাবা গফুর চাচা আমায় বলল,”গত সোমবার এক বিদেশি জামাইর লগে আমাগো হাসির বিয়ে ঠিক হইছে। ছেলে নিজের হাতেই আংটি পরাইছে। বিরাট বড় লোক। বিদেশে এক লাখ টাকা মাসে বেতন পায়। কোনো ঝায়-ঝামেলা নাই। আমাগো হাসি সুখেই থাকবো।”
গত পরশু সকাল বেলা আমি যখন কলেজে যাচ্ছিলাম, তখন চাচা মিয়া আমাকে একথাগুলো সানন্দেই শোনালো। আমি এত হতভম্ব হয়েছিলাম যে, হাসির বিয়ের তারিখটা পর্যন্ত জানতে মনে ছিল না। শুধু ভাবছিলাম, এ কেমন কথা। এমন একটা কলিকে ফুটতেই দেয়া হবে না। আমি কিন্তু মানতে পারলাম না। কারণ আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছি, সে সৃষ্টিকর্তার আপন হাতের তুলিতে গড়া। সে যেমন সুন্দরী, সত্যবাদী; তেমনই মেধাবী। তার মাঝে সৌন্দর্যের মায়া সুখের আভায় জড়ানো। সেটা বাস্তবিকই বুঝতে হলে হাসিকে সামনে এসে এক নজর দেখা জরুরী। অবশ্য এটা আমার নিজের মত। কারণ তারে দেখে এসে আমি মনে রাখতে পারি না হুবহু। সকালের রোদে তারে এক রকম দেখায়, বিকেলের রোদে আবার অন্য রকম।

সেদিন কলেজে আমার একটুও মন বসেনি। স্যার কি বলেছে তার কিছুই যেন ক্লাস শেষে মনে নেই। মনের গভীরে শুধু একটা ভাবনাই ঘুরপাক খাচ্ছিল— হাসির এমন ফুলের মত নিষ্পাপ হাসিটা বুঝি আর দেখতে পারব না!
আচ্ছা আপনিই বলুন! একটা মেয়ে এ সময় কি বুঝে, বিয়ে আর সংসার সম্বন্ধে? তার কী আছে— এতটুকু ধৈর্য? সে কি পারবে, সংসার সামলাতে? এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে? ও কী বুঝে, সংসার কাকে বলে? মোটেও না। বিয়ের পিঁড়িতে বসার কোনো যোগ্যতাই হাসির নেই। এত কোমল মনের, এত অল্প বয়সী মেয়ে হাসির কি হবে তাহলে?

এর কয়েকদিন পর, আমি হাসিকে জিজ্ঞেস করলাম। সে ওইদিন বিকেলে আমাদের উঠোনে বেড়াতে এসেছিল। তখনও তার চোখেমুখে হাসি। সে আর বেশিদিন হাসতে পারবে না। তাই হয়ত ভালো করে হেসে নিচ্ছে।
আমি তারে একাই পেলাম। বাড়ির উঠোনে তখন কেউ ছিল না। তার দুটি কোমল হাত চেপে ধরে বললাম, চল পুকুর পাড়ে। তোর সাথে গল্প করব। সে নিমিষেই যেতে চাইল। কারণ তার সাথে আমার ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার একটা সম্পর্ক আছে। কোনোদিন খেলতাম পুতুল খেলা, কোনোদিন আবার কানামাছি ভোঁ ভোঁ।

আমাদের বাড়িতে দু’টি পরিবার। একটি আমাদের, অন্যটি হাসিদের। পূর্ব-পশ্চিমের প্লটে, আমরা দক্ষিণে আর ওরা উত্তরে। বাড়ির পশ্চিমে একটি বড়সড় আকারের শান্ত পুকুর। পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে একটি কদম গাছ সেই ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি। তার পিছনে একটি সবুজ অরণ্য। যেখানে প্রায় সবসময়ই দোয়েল, ছড়াই আর শালিক-কোকিলরা গানের আসর জমায়। পুকুরের পূর্ব পাড়ে একটি বড় আম গাছ ডানামেলে দাঁড়িয়ে আছে। তার সাথে রয়েছে কাঁঠাল, জারুল, হিজলের দল। পুকুরটির পশ্চিম ও উত্তর পাড়ে চেনা-অচেনা শত রকমের বন্য গাছের অনন্য সমাহার। পুকুরটির পশ্চিম পাড় ঘেঁষে উত্তর-দক্ষিণে বয়ে গেছে একটি ছোট নদী। নদীর ওপাড়ে আছে আরো একটি গ্রাম। সবুজ গাছগাছালির ভিতর লুকিয়ে আছে নিশ্চুপে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন সবুজের ঘন বন। হাতছানি দিয়ে সবুজের মায়া রং শুধু কাছে ডাকে।

চলবে….

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD