1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
আবারও বৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের ২৫ গ্রামে জলাবদ্ধতা
বাংলাদেশ । শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

আবারও বৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের ২৫ গ্রামে জলাবদ্ধতা

ফয়সাল আহমেদ:
  • প্রকাশিত: সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১
  • ২৯১ বার পড়েছে

লঘুচাপের প্রভাবে থেমে থেমে মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ধমকা হাওয়াও বইছে। উপজেলার তারাব পৌর এলাকা, গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন, ভুলতা ইউনিয়নের ডিএনডি বাধের ভিতরের নিন্মাঞ্চল সহ গোটা উপজেলার নিচু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে মানুষের ঘরবাড়িসহ দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, হাট বাজারে পানি জলাবদ্ধতার সৃষ্ঠি হয়েছে। প্রতিবছরই এসব এলাকার মানুষেরা এসময়টায় জলাবদ্ধ হয়ে পড়েন।

ঘর থেকে বেড় হতে পারছেন না। রান্নাবান্না করতে পারছেন না। ময়লা পানি ঘওে প্রবেশ কওে মশার উৎপাত বৃদ্ধি পেয়েছে। ডেঙ্গু আগঙ্কে আছেন তারা।গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে বাঁধের ভেতরে অস্থায়ী বন্যায় পরিণত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে এলাকার কোথাও জমেছে হাটু পানি, আবার কোথাও কোমর পানি। আবার কোথাও অথৈই পানি। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এখানকরা মানুষ। ইতিমধ্যে অনেকে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সরকারী নিয়ম কানুন না মেনে অপরিকল্পিতভাবে বালু ভরাট, ভবন ও বাড়ি ঘর নির্মাণ এ জলাবদ্ধতার প্রধান কারন বলে মনে করেন স্থানীয়রা। পানি নিষ্কাশনে যাত্রামুড়া ও বানিয়াদির পাম্প হাউসগুলো কোন কাজে আসছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে।

রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের ছোট বানিয়াদী, মুড়াপাড়া নগর, ঋষিপাড়া, দেওয়ানবাড়ি, ব্রাহ্মণগাঁও, বড়ভিটা ও পাবই এলাকায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত হতে না পেরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে, বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। পানি জমে থাকায় ফসলি জমিতে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, পাবই গ্রামের পশ্চিমাংশ ও ছোট বানিয়াদী, মুড়াপাড়া নগর, ঋষিপাড়া, ব্রাহ্মণগাঁও, বড়ভিটা এলাকার পূর্বাংশ ও দেওয়ানবাড়ি এলাকার উত্তরাংশের ঘরবাড়িতে পানি উঠে গেছে। কোনো কোনো বসতঘরের মেঝেতে হাঁটু সমান পানি। ঘরের আসবাবপত্র পানিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। কারো কারো আমাশয় ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে। মহিলারা দূর থেকে কলসিতে করে পানি সংগ্রহ করছে।

পাবই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ইলিয়াছ মিয়া বলেন, এখানকার একটি কারখানায় কেমিক্যালের পরিত্যক্ত বোতল ধোয়া পানি জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে মিশছে। এ কেমিক্যালযুক্ত দূষিত পানিতে চলাচল করতে গিয়েই অনেকের চর্মরোগ হচ্ছে। আশপাশের শিল্পকারখানার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা তাদের মালিকদের পক্ষে বলেন, নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী সেচ প্রকল্প ব্লক-১ এর পানি নিষ্কাশন খালটি অপরিকল্পিভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন ধরে খালটি সংস্কার করা হয়নি। এ কারণেই এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। তবে পানি নিষ্কাশনের জন্য শিল্পকারখানার নিজস্ব অর্থায়নে ৮ ফুট গভীর করে খাল নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু ফকিরের দরগা এলাকা দিয়ে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধতা সমস্যা দূর হচ্ছে না। তবে জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হবে। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ নুশরাত জাহান বলেন, জলাবদ্ধতা সমস্যার ব্যাপারে কৃষকদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি।সুষ্ঠু তদন্ত করে শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা পরিষদ সূত্র জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলায় ছোট-বড় সব মিলিয়ে হাজারো মিল-কারখানা রয়েছে। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা লোকজন জমি ক্রয় করে গড়ে তুলেছেন শত শত নতুন ঘরবাড়ি। এসব মিল-কারখানার বর্জ্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেল (খাল) ব্যবহার করা হচ্ছে। কোন কোন স্থানে ক্যানেল ভরাট করে পাকা আধা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছে প্রভাবশালীরা। আর এ খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ফসলেরও। কয়েক বছর ধরেই খালে ময়লা-আবর্জনা ও মিল-কারখানার বর্জ্য ফেলে পানি যাতায়াত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে ও বৃষ্টির দিনে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে প্রায় ২৫ গ্রামের মানুষ। মানুষ খালে ময়লা ফেলছে। ফেলা হচ্ছে বিভিন্ন মিল-কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য।কচুরিপানায় ভরে গেছে খাল।

কোন প্রকার নিয়মনীতি মানছে না ওই শ্রেণীর মানুষ। এতে খাল দিয়ে আবারও পানি যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েক দিনের টানা বর্ষণে বানিয়াদি, গোলাকান্দাইল ৫ নং ক্যানেল, নাগেরবাগ, নতুন বাজার, কাটাখালী, পেরাব, ভুলতা, মিয়াবাড়ী, পাঁচাইখা, আমলাব, শিংলাবো আউখাবসহ প্রায় ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেলগুলো (খাল) দেখ ভাল করা হলে স্থানীয়রা জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পেত। গালাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন ভুইয়া বলেন, খালগুলো দখল মুক্ত করে পানি যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে পানি সরে যাবে ।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বলেন, প্রশাসনকে দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। যাতে খালগুলো দখল বা ভরাট না হয়ে যায়। এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ শাহজাহান ভুইয়া বলেন, যারা ময়লা-আবর্জনা ফেলে বা বিষাক্ত বর্জ্য ফেলে খাল ভরাট করে পানি যাতায়াতে বাধার সৃষ্টি করছে এবং জবর দখল করে রেখেছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ নুশরাত জাহান বলেন, খুব দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD