মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে লাউয়াছড়ার জাতীয় উদ্যান নানা জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ সবুজে ঘেরা।এ উদ্যানের নানা প্রজাতির জীবজন্তুর মধ্যে একটি হল কেশরওয়ালা সিংহ বানর বা উল্টোলেজি বানর।আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) লাল তালিকায় এ প্রজাতিকে সঙ্কটাপন্ন বিবেচনা করা হয়েছে।
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) লাউয়াছড়া উদ্যানে দেখা মিললো কেশরওয়ালা সিংহ বানর বা উল্টোলেজি বানরের একটি দলের।এ বানর হচ্ছে ম্যাকাকগণের একটি বানর প্রজাতি।এরা কুলু বান্দর,ছোটলেজি বানর,উলু বান্দর প্রভৃতি নামেও পরিচিত।উল্টোলেজি বানরের সোনালি রঙের লেজটি মেরুদণ্ড বরাবর নিচের দিকে একটু উঁচু হয়ে ঝুলে থাকে।
এ বানর কিন্তু সচরাচর দেখা যায় না।এদের গায়ের রং হালকা সোনালি থেকে বাদামি।তবে ওপরের অংশ জলপাই ধুসর আর নিচের দিক ধুসর সাদা।মাথার মাঝখানটা চ্যাপ্টা ও কালচে রঙের।বয়স্ক বানরের মাথায় কখনো কখনো কেশর দেখা যায়।১৬২-১৮৬ দিন পর একটি বাচ্চা দেয় এরা।এরা ১০-১২ বছর বাঁচে।
বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ছাড়াও হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান এবং রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে এদের পাওয়া যায়।দলবদ্ধভাবে এরা বসবাস করে।পুরুষ,স্ত্রী ও বাচ্চা মিলে ২০-২৫টি বানর এক দলে বাস করে।পুরুষরা দলের নেতৃত্ব দেয়।
স্বভাবে পুরুষ বানর বেশ রাগী হয়।কাউকে ভয় দেখানোর জন্য দাঁত-মুখ খিঁচিয়ে ভেংচি কাটে এরা।এদের খাদ্য তালিকায় আছে ফল-মূল,কচি পাতা,কুঁড়ি,কীটপতঙ্গ,কাঁকড়া,পাখির বাচ্চা,পাখির ডিম ইত্যাদি।এ বানর সম্পর্কে প্রকৃতিপ্রেমী রুহুল ইসলাম হৃদয় জানান,এই বানরকে ইংরেজিতে বলে Northern pig-tailed macaque।এরা বৃক্ষবাসী এবং দিবাচর।শক্ত সমর্থ পুরুষের নেতৃত্বে পাঁচ থেকে পঁচিশটির মতো দলবদ্ধভাবে বাস করে এরা।