বিদেশি মদ আটকের ঘটনায় চোরাচালানীদের ব্যাপারে মামলা না করে উল্টো ঘটনা ধামাচাঁপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক এএসআই ও অপর এক এসআই’র বিরুদ্ধে। মাদক চোরাচালীনকে দু’দিন আটকে রেখে আইনের ফাঁক তৈরী করে দিয়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানা থেকে ফের ওই চোরাচালারনীকে ছেড়ে দেয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
একই ঘটনায় পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তার বক্তব্যে মূল ঘটনা ধামাচাঁপা দেয়ার বিষয়টি সূস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এদিকে চোরাচালানীদের রক্ষায় অভিযানে থাকা থানার এক এসআই ও অপর এক এএসআই গত তিন দিন ধরেই গণমাধ্যমকে তথ্য দিতে সময় ক্ষেপন ও নানা রকম গরিমসি করছেন।
থানা পুলিশের এমন অপেশাদারা কর্মকান্ডে নানা শ্রেশি পেশার মানুষজন বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। সরজমিনে থাকা রোববার রাতে পুলিশী অভিযানের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার সীমান্তবর্তী টেকেরঘাটে পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান চলাকালে টেকেরঘাট- লাকমা সীমান্ত সড়কের উপর হতে শনিবার রাতে বিপুল পরিমাণ বিদেশি (ভারতীয়) মদের চালান সহ নেত্রকোনার দুর্গাপুরের মুক্তারপাড়ার ইউসুফ হাওলাদারের ছেলে রফিক হাওলাদারকে আটক করেন থানার এসআই অপূর্ব সাহা ও টেকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এএসআই ফরিদ।
এরপর ওই রাতেই দালালচক্র মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে চোরাকারবারীকে ছাড়িয়ে নিতে তৎপর হয়ে উঠলে বিষয়টি ধামাচাঁপা দিতে সায় দেন পুলিশের দুই কর্মকর্তা সহ অন্যরা। পরদিন সোমবার পরিবারের লোকজন থানা থেকে মুছলেখা দিয়ে ওই চোরাকারবারীকে বীরদর্পে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
রোববার রাতে থানার টেকেরঘাট ফাঁড়ি ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এএসআই ফরিদের নিকট জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমের নিকট অকপটে স্বীকার করেন, এক বোতল বিদেশি (ভারতীয় অফিসার্স চয়েজ) মদের বোতল সহ একজনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার ওই বিষয়ে ফের জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি ওসি ও এসআই অপূর্ব সাহা ভাল বলতে পারবেন।
সোমবার সন্ধায় ও রাতে দু’দফা মুঠোফোনে কল করে এসআই অপূর্ব সাহার নিকট বিদেশি মদসহ চোরাচালানী আটকের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন ব্যস্ত আছি পরে আলাপ করব।, এরপর মধ্যরাতে ফের ফোন করে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,হ্যা রোববার রাতে আমি এসআই ফরিদ দু’জনই টেকেরঘাট বাজারের একটি দোকানের পাশে দুই বোতল বিদেশি(ভারতীয় অফিসার্স চয়েজ মদের বোতল,প্রতিটি ৭৫০ মি.লি.)পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্যার করেছি।
এরপর একই রাতে টেকেরঘাটে বিদেশি মদ সহ চোরাচালানী আটকের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, না, না আসলে টেকেরঘাট লাকমা সড়কে রাত পৌণে দু’টার দিকে এক কিশোর ঘুরাফেরা করছিল, পুলিশ ফাঁিড়তে নিয়ে তাকে এসে ্আটকে রাখি।
মঙ্গলবার তাহিরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন, টেকেরঘাটে মাদক জব্দ ও কিশোরকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া দুটি ভিন্ন ঘটনা হওয়ায় মুছলেখায় সোমবার কিশোরকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং মাদক পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ দেখিয়ে আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
ওই রাতে টেকেরঘাটে অভিযানে থাকা এক অফিসার বিদেশি মদসহ ওই চোরাচালানীকে আটকের কথা স্বীকার করেছিলেন বলার পর ওসি কোন রকম সদুত্তর না দিয়ে বলেন, শিশু বাচ্চা ছিল, পরে কথা বলব।