৬৫ দিন পর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় সাগরে নেমে আশানুরূপ ইলিশ মেলেনি চট্টগ্রামের আনোয়ারার ১০ হাজার জেলের জালে।ভরা মৌসুমে ৬০০ ট্রলার নিয়ে সাগরে নেমেছিলেন উপকূলীয় এলাকার জেলেরা।তবে দ্বিতীয় পূর্ণিমায় আর হতাশ হননি তারা। ভাদ্রে পূর্ণিমার শুরু থেকে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়তে শুরু করেছে ইলিশ।জোয়ারের দিনক্ষণ মিলিয়ে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার উপকূলে জমে উঠেছে রুপালি ইলিশের মেলা।
ছোট ও মাঝারি আকারের ইলিশ ধরা পড়ায় জেলেদের চোখে-মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠেছে।গত শনিবার সকালে উপজেলার গহিরা উপকূলীয় এলাকার উঠান মাঝির ঘাট ও দোভাষী ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে,এর আগের দুই দিন সাগর থেকে ইলিশ বোঝাই করে ঘাটে ফিরেছে অর্ধশতাধিক ট্রলার।এসব ট্রলার গহিরার বিভিন্ন ঘাটে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে।ইলিশ সংরক্ষণে মাঝিমাল্লাদের মাঝে ছিল সংরক্ষণের তোড়জোড়।
দিঘির মোড়ে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে।৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি করতে দেখা গেছে এক হাজার ৫00 টাকায়।প্রতি তিনটায় কেজি এমন ইলিশের কেজি সাড়ে ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ছোট জাটকা প্রতিকেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।দৌভাষী ঘাট মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ীরা বলেন,এক সপ্তাহ আগে যে ইলিশ দুই হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে,এখন সেগুলোর হালি দুই হাজার ৫০০ হাজারে হাঁকাচ্ছে তার মতে,বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে।সরবরাহ বাড়লে ইলিশের দাম কমবে।
উঠান মাঝি ঘাটের বাজারের ইলিশ বিক্রেতা ওসমান জানান,ইলিশের মৌসুম হলেও অন্য বছরের তুলনায় এ সময় ইলিশ ধরা পড়ছে কম।এ কারণে বাজারে ইলিশের দাম ওঠানামা করলেও অন্য বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি।উপজেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ দাশ বলেন,মূলত সাগরে মিষ্টি পানি আসার সঙ্গে সঙ্গে গভীর সমুদ্র থেকে বড় মাছগুলো কাছে চলে আসে,আর তখনই জেলের জালে আটকে পড়ে যায়।
আর এ বছর বৃষ্টি হওয়ার পরও জেলেদের জালে প্রথম দিকে মাছের দেখা মেলেনি।আশা করি আগামী পূর্ণিমাতে জেলেরা আরও মাছ পাবেন।উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রাশিদুল হক বলেন,আসলে আমরা সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি,জেলেদের জালে তেমন আশানুরূপ মাছ ধরা পড়েনি প্রথম দিকে।ভাদ্রের শুরু থেকে মাছ ধরা পড়েছে।তবে আকারে ছোট।জোয়ারের এদিকে উপজেলার মাছের সবচেয়ে বড় আড়ত কালাবিবির দিনক্ষণ মিলিয়ে সামনে আরও ধরা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মৌসুমের শুরুতে ইলিশের দেখা না পেলেও এখন কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ায় হাসি ফুটেছে জেলে,আড়তদার ও মৎস্যজীবীদের মুখে।ঘাটকূল এলাকায় দেখা যায়,কেউ ইলিশ মাছের ঝুড়ি টানছেন,কেউ প্যাকেট করছেন,আবার কেউ বা সেই প্যাকেট বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে তুলে দিচ্ছেন ট্রাকে।ট্রলার থেকে মাছ নামতেই জেলেরা ডাক বসাচ্ছেন মাছের দামের।