অসহায় মায়ের কোলে অসুস্থ সন্তান জুনাইদ ইসলাম সাগর (৩)। সন্তানের সঠিক চিকিৎসার খোঁজে বিভিন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মা জেসমিন বেগম। কী করবে? কোথায় যাবেন? তা নিয়ে চোখের পানি ফেলে দিন কাটছে এই মায়ের। কথা বলতে গেলেই নিজের সন্তানের সঠিক চিকিৎসার জন্য ভিক্ষা চেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এই মা।ঘটনাটি ঠাকুরগাঁও রানীশংকৈল উপজেলার নন্দুয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের।সেই ওয়ার্ডের মিডডাঙ্গী পাইকারবস্তি গ্রামের বিপ্লব আলী ও জেসমিন বেগমের একমাত্র সন্তান সাগর।
নেই নিজস্ব কোনো ঘরবাড়ি, নেই পরিবার চালানোর মতো কোনো উপার্জনের ব্যবস্থা। একদিকে সন্তানের চিকিৎসার চিন্তা করছেন মা অপরদিকে সন্তানের চিন্তা মাথায় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বাকপ্রতিবন্ধী বাবাও।জন্মের পর থেকেই স্বাভাবিক জীবনযাপন করলেও হঠাৎ যেন পরিবর্তন আসে ছোট্ট এই শিশুর জীবনে। ফুলে উঠেছে তার সমন্ত শরীর, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তার চোখ, বেড়ে গেছে তার পেট।কিডনিজনিত সমস্যা, প্রসাবের রাস্তায় ইনফেকশন, রক্তে ভাইরাস ও অ্যালার্জি রোগে আক্রান্ত শিশু সাগর। সন্তানের উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সাহায্য চান তারা। সন্তানের এমনি অসুস্থতায় যেন নিরুপায় পরিবারটি।
জানা যায়, গত বছরের দিকে হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পরে শিশু সাগর। এর পর বিভিন্ন মানুষের কাছে সাহায্য নিয়ে দিনাজপুর উত্তরা ডায়াগনস্টিক ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয় সাগরকে। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পরে সে সুস্থ হলেও আবারও অসুস্থ হয়ে পরে শিশুটি।পরে তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা নেওয়ার পরে অবশেষে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুর নিয়ে যেতে বলে। কোনো উপায় না পেয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছে আর্থিক সাহায্য নিয়ে অবশেষে রংপুরে নেওয়া হলে সুস্থ হয়ে ওঠে শিশু সাগর।কিন্তু চলতি বছরে যে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। ফুলে উঠেছে তার শরীর, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তার চোখ। এবারে প্রায় নিঃস্ব যেন পরিবারটি। সন্তানের সঠিক চিকিৎসার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে পরিবারটি।
শিশুটির মা জেসমিন বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই আমার ছেলে এভাবে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছে। এর আগে অনেকদিন মানুষের কাছে টাকা নিয়ে ছেলেটার চিকিৎসা করেছি। এখন আমার বাবার (সাগর) অবস্থা অনেক খারাপ, শরীর ফুলে গেছে, কী করে তাকে বাঁচাব? আমার ছেলেকে ঠিক করার জন্য আপনারা একটু এগিয়ে আসুন। আমি আমার ছেলেকে সুস্থ করতে চাই।ফেসবুকভিত্তিক ‘রানীশংকৈল ফেসবুক ব্যবহারকারী’ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অ্যাডমিন ও রানীশংকৈল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আকাশ বলেন, ‘হামার ঠাকুরগাঁও’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে আমি এই শিশু সাগরকে নিয়ে পোস্ট দেখি। এরপর আমি গ্রুপের সকলকে বলি শিশুটির সঠিক পরিচয় বের করার জন্য।
আনোয়ার হোসেন আকাশ বলেন, সেখানে শুধু শিশুটির চিকিৎসার জন্য যে খরচ হবে সেটি বহন করবেন হেল্প হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক রংপুরের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম নওশাদ। হাসপাতালে থাকা খাওয়া, ওষুধ কেনা সব কিছুই আমাদের গ্রুপের সদস্যরা দেখবেন। এ ব্যাপারে কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে শিশুর মা জেসমিন বেগমের সঙ্গে এই নম্বরে (০১৩০৪৮৩৮৩৪০) যোগাযোগ করতে পারবেন। এছাড়া শিশুটির ভাই আলতাফুর রহমানের বিকাশ/নগদ ও রকেট নম্বরে (০১৭১৭২০০২২৩) সহায়তা করা যাবে।