কক্সবাজারের পেকুয়ায় মগনামা হাই স্কুল সড়ক সংষ্কারের দাবীতে সড়কে ধানের চারা রোপন করে প্রতিবাদ করছে স্থানীয়রা।ধানের চারা রোপণ করে সড়কটি সংষ্কারের দাবী জানান তারা।সড়কটি দীর্ঘ দিন সংষ্কার না হওয়ায় বর্তমানে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে।এতে করে কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে।
সড়কের বেহাল দশা যাতায়াত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকার প্রায় হাজার হাজার মানুষের।এর উত্তরণের জন্য সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী গ্রামবাসীরা ধানের চারা রোপণ করে সড়ক সংষ্কারের জোরালো দাবী উত্তাপন করেছেন।২৭ জুলাই (মঙ্গলবার) সকালের দিকে কিছু এলাকাবাসী ধানের চারা নিয়ে সড়কে নেমে পড়ে।
প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে তারা কাঁদাযুক্ত সড়কে ধানের চারা রোপণ করে।মুহুরীপাড়া বাজারের মগনামা হাইস্কুল সংলগ্ন সড়কের মূল পয়েন্টে এ আন্দোলন করে।স্থানীয় সুত্র জানায়,মগনামা হাইস্কুল সড়কটি ১৯৯২ সালে ব্রিক সলিন দ্বারা সংষ্কারকাজ বাস্তবায়ন হয়েছে।১৯৯১ সালে উপকুলে প্রচন্ড ঘুর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছাস হয়।
সেই সময় সড়কপথে ত্রাণ তৎপরতা জোরদার করতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) হাই স্কুল সড়ক সংষ্কার করে।মুহুরীপাড়া বাজারের পশ্চিম সীমানা থেকে সড়কটি পূর্বদিকে বহমান।বাইন্যাঘোনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়ক পর্যন্ত এর বিস্তৃতি প্রায় ৩ কিলোমিটার।তবে সেই সময় দেড় কিলোমিটারে ব্রিক সলিন দ্বারা উন্নয়ন সাধিত হয়।
পরবর্তীতে দীর্ঘ ৩০ বছর সড়কটি পুন:সংষ্কারকাজ বাস্তবায়ন হয়নি।বর্তমানে মোজামিয়ার ঘোনা থেকে মুহুরীপাড়া বাজার পর্যন্ত সড়কটিতে আংশিক ব্রিক রয়েছে।তবে মোজামিয়ার ঘোনা থেকে বাইন্যাঘোনা আশ্রায়ন প্রকল্প পর্যন্ত সড়কটিতে মাটি ভরাট ছিল।ওই অংশে বর্তমান প্রায় বিলুপ্ত দেড় কিলোমিটার।
১ কিলোমিটারে মুহুরীপাড়া অংশে লোকালয় রয়েছে।লোকালয়ের মাঝখান দিয়ে বহমান সড়কটিতে খানা খন্দকে পরিনত হয়েছে।সংষ্কার না হওয়ায় সড়কের বিপুল অংশে এখন ইট নেই।রুপান্তর হয়েছে কাঁচা সড়কে।বড় বড় গর্ত আর কাঁদার মিশ্রণে সড়কটি এখন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
কয়েক বছর ধরে জনগুরুত্বপূর্ন ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী জনগনের মধ্যে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে।যানবাহন চলাচল তো নেই।তবে পায়ে হেঁটে যাওয়া যাচ্ছে না।এ দিকে জনদুর্ভোগ লাঘব করতে স্থানীয়রা ব্যক্তি উদ্যোগে সড়কটির আংশিক সংষ্কারকাজ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
সম্প্রতি হাইস্কুল সড়ক উন্নয়নের জন্য একটি কমিটিও গঠিত হয়েছে।৫নং ওয়ার্ডের প্রধান গুরুত্বপূর্ন সড়ক এ হাইস্কুল সড়কটি।মুহুরীপাড়া-মগঘোনা-দরদরীঘোনা এ তিন গ্রামের সমন্বয়ে একটি কমিটি আত্মপ্রকাশ পায়।ইটের কংকর ও বালি দিয়ে সংষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তবে স্থানীয়দের দাবী ব্যক্তি পর্যায়ে সংষ্কারকাজ বাস্তবায়ন মোটেই সম্ভব নয়।তারা সরকারী অর্থে সড়কটি সংষ্কার বাস্তবায়ন চান।ওই দিন সকালে তিন গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে সড়ক সংষ্কারের দাবীতে বৃষ্টির মধ্যে নেমে পড়েন ধানের চারা নিয়ে।স্থানীয় বাসিন্দা মাহামুদুল করিম জানান,সব জায়গায় উন্নয়ন হচ্ছে।
কিন্তু এ সড়কটির বেলায় কিছুই হচ্ছেনা।আমরা আর কতদিন এ ভাবে কষ্ট পাবো।শিক্ষক আশেক বিন জলিল জানান,আমরা সরকার ও দেশবাসীকে দৃষ্টি দেওয়ার জন্য সড়কে ধানের চারা নিয়ে নেমে গেছি।লবণ ব্যবসায়ী মুহাম্মদ ইউনুছ জানান,আমরা চাঁদা তুলে ইট,কংকর দিয়েছি অনেকবার।
এখন মানুষ চলাফেরাও করতে পারেনা।এটি চরম বৈষম্য।শিক্ষক নুরুল আমিন জানান,ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছেনা।আসলে সরাসরি না দেখলে বুঝাও যাচ্ছেনা যে মানুষের দুর্গতি কি পর্যায়ে।সড়ক সংষ্কার গঠিত কমিটির সদস্য মনিরুল কবির জানান, আমরাতো হেঁটেও যেতে পারছিনা।
জরুরী চিকিৎসার জন্য কোন রোগীও নেওয়ার মতো পরিবেশ নেই এ সড়কের কারণে।বর্তমান যুগে এ ধরনের কঠিন অবস্থায় আর কেউ আছেন বলে মনে হয়না।শিক্ষার্থী সোলতান মুহাম্মদ রিয়াজ,শফিকুর রহমান ছোটন জানান,আমরা মনোবলকে দৃঢ় করেছি।মনে হচ্ছে এখানে আমরা রাষ্ট্রের কোন নাগরিক নই।
ব্যবসায়ী এমরান হুদা জানান,আমার বাড়ি থেকে মুহুরীপাড়া বাজারে আসতে আধা কিলোমিটারের মধ্যে পায়ে হেঁটে আসাও কঠিন হয়ে গেছে।মহিলা ও শিশুরা মোটেও চলাফেরা করতে সক্ষম নন।আইয়ুব মিয়া,মনিরুল করিম জানান,৩০ বছর আগে একবার ইট বসাই।এরপর আর হাত দেয়া হয়নি।
সড়ক সংষ্কার উন্নয়নে অন্যতম দাবীদার জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক ড.আশরাফুল ইসলাম সজীব জানান,এখানে আমাদের পৈত্রিক বাড়ি।এখানকার মানুষ আওয়ামীলীগ করে।দ্বিতীয় টঙ্গীপাড়া বলা যাবে মুহুরীপাড়াসহ ৫ নং ওয়ার্ডকে।এটাই মূলত কারণ।জনপ্রতিনিধিদের বৈষম্যমূলক আচরণের কারনে আজকে আমরা সড়কটি নিয়ে কষ্টে আছি।আশা করছি কষ্ট পেলেও ইনশাআল্লাহ হয়ে যাবে।