কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কলেজ ছাত্র জামশেদুর রহমান মিয়াজী জুয়েল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার ১১ মাস পর সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হককে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের ৪২ জনের নাম উল্লেখ করে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার(১ জুন) তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ।
মামলাটি দায়ের করেছেন শহীদ জামশেদুর রহমানের চাচা আইয়ুব মিয়াজী। মামলায় সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রহমত উল্লাহ বাবুল ও উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি আরশ মজুমদারসহ ৪২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা আরো ৮০ জনসহ মোট ১২২ জনকে আসামী করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ফেলনা গ্রামের মিয়াজী বাড়ির আইয়ুব মিয়ার ভাতিজা জামশেদুর রহমান কুমিল্লা সরকারি কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি বৈষম্যেবিরোধী আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট জামশেদুর রহমান সকাল থেকে চৌদ্দগ্রামে কোটা সংস্কার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ওই দিন দুপুরে সরকার পতনের খবর শুনে হাজার হাজার ছাত্রজনতা বিজয় মিছিল করে। এ সময় চৌদ্দগ্রাম বাজারে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসের আশপাশ থেকে আন্দোলনকে দমন করার জন্য আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্রসহ ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিলে হামলা করে। এ সময় গুলিতে গুরুতর আহত জামশেদুর রহমানকে সাথে থাকা যুবকেরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জামশেদুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বিপ্লব, মো. সোহেল, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল হালিম, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি জোবায়ের হোসেন শুভ, সৈকত, বাবলু মোল্লা, আবু তাহের, সুমন রেজা, মো. শাহিন, তোফায়েল, মোশাররফ, আলী হোসেন লিটন, হারুনুর রশিদ মাছুম, রাকিব, গাজী শহীদ, রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী, গাজী কাজল, ইমান আলী, মো. ইউসুফ, তুরাজ মজুমদার, আলমগীর মেম্বার, নুরুল হুদা ফকির, একরামুল হক, কাজী মাছুম বিল্লাহ, পারভেজ, ফখরুল ইসলাম মেহেরাজ, নুর উদ্দিন রাজিব, জিএম জাহিদ হোসেন টিপু, মহিবুল আলম কানন মজুমদার, সুব্রত টোটন, ইয়াছিন আরাফাত, দ্বীন মোহাম্মদ সোহাগ, শামীম, জিহাদ হোসেন জাবেদ, সাজ্জাদ, লকিয়ত উল্লাহ সাগর, মাইন উদ্দিন দীপু, জামাল হোসেন ও হাফেজ বেলাল।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, গুলিতে নিহত কলেজ ছাত্র জামশেদুর রহমানের হত্যার ঘটনায় তার চাচা আইয়ুব মিয়াজী ১২২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। আমরা আসামীদের গ্রেফতারের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।