দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে রেল লাইনের পাশ্ব থেকে বাম পা কাটা অবস্থায় শিফাত আহম্মেদ শিশির (১৭) নামের এক ছাত্রলীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এটি দুর্ঘটনা না-কি হত্যা এ নিয়ে সন্দেহ-সংশয় জনমনে। তবে পরিবারের দাবি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টায় পৌরএলাকার রেলঘুমটি সংলগ্ন স্বজনপুকুর গ্রামের রেল লাইনের পাশ্ব থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করে পার্বতীপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার (জিআরপি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম নুরুল ইসলাম।

নিহত শিফাত আহম্মেদ শিশির উপজেলার কাজীহাল ইউনিয়নের আঁখিঘোটনা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। সে ফুলবাড়ী শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের এইচ এসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং কাজীহাল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল।

এ ঘটনায় ফুলবাড়ী উপজেলা শাখা, পৌর ও শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজ, ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় ডান পা কাটা অবস্থায় একটি মরদেহ রেল লাইনের দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে ফুলবাড়ী রেল স্টেশন মাস্টার হায়দার আলীকে খবর দিলে তিনি পার্বতীপুর রেলওয়ে থানা পুলিশকে (জিআরপি) খবর দেন।

পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধারসহ মরদেহের সাথে থাকা ব্যাগ থেকে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়ে পরিচয় নিশ্চিত করেন। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শিফাত আহম্মেদ শিশিরের পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে মরদেহটি শনাক্ত করেন। পরে মরদেহটি জিআরপি পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের মর্গে প্রেরণ করেন।

শিফাত আহম্মেদ শিশিরের চাচাতো ভাই মেজবা কামাল বলেন, শিফাত আহম্মেদ শিশির সকাল সাড়ে ৮টায় বাড়ি থেকে কলেজ যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়। কলেজ শেষে পৌরএলাকার চকচকা গ্রামের তার খালার বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সারাদিন পেরিয়ে সন্ধ্যা নামলেও শিফাত তার খালার বাড়িতে যায়নি।

পরে রাত ১০টায় রেললাইনের পার্শ্বে শিফাতের মরদেহ পাওয়া গেছে এমন খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে বাম পা কাটা অবস্থায় শিফাতের মরদেহ দেখতে পাই। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-। আমাদের ধারণা তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে রেললাইনের পাশে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ফুলবাড়ী রেল স্টেশন মাস্টার হায়দার আলী বলেন, ফুলবাড়ী থেকে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে বরেন্দ্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি পার্বতীপুর যায়।

ট্রেনটি যাওয়ার ১০ মিনিট পরে গেটম্যানের মাধ্যমে জানতে পারি রেলঘুমটি সংলগ্ন হোম সিগন্যাল ও আউটার সিগন্যালের মাঝামাঝি স্থানে রেললাইনের পাশে একটি পা কাটা মরদেহ পড়ে আছে। বিষয়টি পার্বতীপুর রেলওয়ে থানা পুলিশকে (জিআরপি) খবর দিলে তারা এসে মরদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার (জিআরপি) উপপরিদর্শক (এসআই) ছামেদুল ইসলাম বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এবিষয়ে একটি অপমৃত্যু (ইডি) মামলা রুজু করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

পার্বতীপুর রেলওয়ে থানার (জিআরপি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম নুরুল ইসলাম বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এটি ট্রেনে কাটা পড়েছে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। সেজন্য সঠিক তথ্য নিশ্চিত হতে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।