1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
ঘোড়াঘাটের বারপাইকের গড় দুর্গটি এখন অস্থিত্ব সংকটে
বাংলাদেশ । রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ২১শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

ঘোড়াঘাটের বারপাইকের গড় দুর্গটি এখন অস্থিত্ব সংকটে

আরিফুল ইসলাম জিমন:
  • প্রকাশিত: রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৩
  • ৩৩২ বার পড়েছে
দৈনিক কালজয়ী

বার পাইকের গড় দেশের রংপুর বিভাগে অবস্থিত একটি প্রাচীন স্থাপনা। এটি মূলত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার অন্তর্গত একটি প্রাচীন দুর্গ। এটি বাংলাদেশ প্রতœতত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত একটি প্রততাত্বিক স্থাপনা। পৌরনিক কাহিনীর জেলা ইতিহাস-ঐতিহ্যের দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট বারপাইকের গড় দুর্গটি আজ বিলীনের পথে।

অবহেলা আর সংস্কার অভাবে অস্থিত্ব সংকটে এই দুর্গটি। বারপাইকের গড়ের পশ্চিম দিকে নদীর চেয়ে চওড়া ও গভীর পরিখা আছে। এক সময় এই খাদে পানির প্রবাহ অনেক ছিল। খাদের পাশে বড় রাজপথ আছে। প্রাচীনকালে এই গড়ের ভিতরে একটি অট্টালিকা ছিল, ব্রিটিশ আমলেও তার সামান্য অস্তিত্ব দেখা গিয়েছিল । বর্তমানে এখানে সামান্য উঁচু মাটির ঢিবি দেখা যায়।

ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত ঘোড়াঘাট-রানীগঞ্জ সড়কের উপর বিরাহিমপুর কাচারী। আর কাচারীর পূর্ব ধারেই মইলা (মরা করতোয়া) নদী বেষ্টিত ত্রিভূজাকৃতি স্থলভাগটিই ‘বারপাইকের গড়’। মৌজার নামও বারপাইকের গড়, মৌজার মোট জমি ৩৯৩.৬০ একর। ঘোড়াঘাট দুর্গ থেকে এস্থানের দূরত্ব উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ১০ কিলোমিটার। এখানে প্রাচীনকালে একটি দুর্গ ছিল তার প্রমাণ মিলে ইতিহাসে। গড়ের জমির পরিমাণ ৭৬.২৭ একর।

নদীর স্রোত ঘেষে গড়ের চর্তুদিকে ৪০ফুট প্রশস্থ ও ৮/১০ফুট উঁচু মাটির প্রাচীর ছিল। বর্তমানে মাটির প্রাচীরের উঁচ্চতা আগের তুলনায় হ্রাস পেয়েছে। গড়ের চর্তুপাশে যে নদী বা পরিখা আছে তার প্রশস্থতা পূর্ব দিকে ৫০ ফুট এবং পশ্চিম ও দক্ষিন দিকে ১২০ফুট, গভীরতার কারনে খরা মৌসুমেও পানি থাকে। স্থানটি বড় গড় ও ছোট গড় দুটি অংশে এখন বিভক্ত। গড়ের ধারে প্রাচীন সামধির পাশেই আছে প্রততত্ত্ব বিভাগের একটি সাইনবোর্ড।

কথিত আছে যখন গৌড়ের সুলতান রুকনউদ্দিন বরবক শাহ (১৪৫৯-১৪৭৬ খ্রি.) ছিলেন, তখন তার সেনাপতি শাহ ইসমাইল গাজী ১২ জন পাইকস এই দুর্গে আশ্রয় নিয়েছিলেন । ১২ জন পাইক থাকার কারণে এই দুর্গটির নাম বারপাইকের গড় হয়।
ধারনা করা হয় এই গড়টি পাঠান আমলের আগে নির্মিত হয়েছিল কামরূপ কামতা রাজ্যের আক্রমন প্রতিহত করার লক্ষ্যে। রাজা নীলাম্বরের সময়ে দুর্গটি নির্মিত বলে কোচবিহারের ইতিহাসে ইঙ্গিত রয়েছে।

কিন্তু গড়টি ঐ রাজার আমলেরও আগের বলে অনুমেয়। যাই হোক, মুসলিম শাসন আমলে দুর্গটি ধীরে ধীরে গুরুত্ব হারাতে থাকে। এর পরিবর্তে ঘোড়াঘাট দুর্গ প্রাধান্য লাভ করে। ক্রমে স্থানটি জঙ্গলকীর্ণ ও দুর্গম হয়ে পড়ে। পাকিস্তান আমলে স্থানীয় সাঁওতাল ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরা জঙ্গল পরিষ্কার করে স্থানটি আবাদযোগ্য করে তোলে। বিরাহিমপুর থেকে গড়ে পারাপারের জন্য একটি বাঁশের সাঁকো আছে।

সরেজমিনে বাস্তব অবস্থা দৃষ্টে বলা যায়, অতীতে এটা সুরক্ষিত দুর্গ ছিল। গড়ের পূর্ব ধারে একজন মুসলমান পীরের মাজার আছে। সেটি দেওয়ান পীরের মাজার বা অচীন পীরের মাজার বলে স্থানীয়রা জানেন। তবে তিনি কোথাকার লোক এবং কী তার পরিচয় সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। স্থানীয় মুসলমানসহ অন্য ধর্মের লোকও এ মাজারকে যথেষ্ট সম্মান করেন এবং সিন্নী মানত করে থাকেন। এই গড়কে নিয়ে নানান জনশ্রুতি স্থানীয়ভাবে প্রচার রয়েছে।

বারপাইকেরগড় দরগা ও বাজার পরিচালনা কমিটির সহ-সম্পাদক মোহাম্মদ সুলতান কবির জানান, বারপাইকের গড়ের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্ঠা করছে এই কমিটি। তবে এই গড়ের সাথে সংযুক্ত রাস্তাগুলো পাকাকরন করা হলে ইতিহাস-ঐতিহ্যের এই বারপাইকের গড় দেখতে দুর-দুরান্ত থেকে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD