সারাদেশে কঠোর লকডাউন ও সরকারের বেধে দেয়া বিধি-নিষেধ প্রথম দফায় ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই ঘোষণা করা হয়। এরপর আরো ৭দিন বাড়িয়ে তা ১৪ জুলাই বর্ধিত করা হয়। শেরপুর জেলা শহরের কঠোর লকডাউনের ১৩তম দিনের চিত্র ছিল ভিন্ন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সেনাবাহিনীর গাড়ী দেখলেই শহরের বিভিন্ন দোকানের সার্টার নামানোর চলে প্রতিযোগিতা। তারপরেও ভ্রাম্যমাণ আদালতে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে গুণতে হয়েছে মোটা অংকের জরিমানা। ১৩ জুলাই মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া সন্ধ্যা পর্যন্ত পৃথক পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৮টি মামলায় ৮টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৫৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রশীদ এর নির্দেশনায় সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তনিমা আফ্রাদ ও ময়মনসিংহ সেনানিবাদের ৪ বীর এর ক্যাপ্টেন আরিফুর রহমান এসপিপির নেতৃত্বে সেনা সদস্যরা মঙ্গলবার সকাল থেকে শেরপুর জেলা শহরে লকডাউন পর্যবেক্ষণ করেন। এসময় শহীদ বুলবুল সড়ক ও মুন্সী বাজার এলাকার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মচারীরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে ওইসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সার্টার নামানোর জন্য চলে প্রতিযোগিতা। এতেও রক্ষা পায়নি বেশ কয়েকটি ওইসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং গুণতে হয়েছে মোটা অংকের জরিমানা।
পরে লকডাউন অমান্য করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তনিমা আফ্রাদ সংক্রমণ ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ নির্মূল আইন ২০১৮ এর ২৫ এর ১ (খ) ধারায় বধূয়া বস্ত্রালয়কে ৩০ হাজার টাকা, একই মার্কেটেরে তৃপ্তি টেইলার্সকে ৪ হাজার টাকা এবং নিউমার্কেটের ফ্যাশন কালেকশনকে ৪ হাজার টাকা ও ডিজিটাল আইটি ওয়ার্ল্ডকে ৮ হাজার টাকাসহ ৪টি মামলায় ৪৬ হাজার জরিমানা আদায় করেন।
এদিকে একই দিন বিকেলে সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডিএম সাদিক আল শাফিন ও সেনা অফিসারসহ একদল সেনা সদস্য জেলা শহরের খরমপুর ও তেরাবাজার এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় লকডাউন অমান্য করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার দায়ে ১৮৬০ সালের দঃবিঃ ২৬৯ ধারায় খরমপুর এলাকায় ১টি খাদ্য দোকানীকে ১ হাজার টাকা এবং তেরাবাজার এলাকায় ১টি কাপড় দোকানীকে ২ হাজার টাকাসহ ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
অপরদিকে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান মাহমুদ জেলা শহরের বিভিন্নস্থানে লকডাউন পর্যবেক্ষণ ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় লকডাউন অমান্য করে সন্ধ্যায় খরমপুর এলাকায় ১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার দায়ে ১৮৬০ সালের দঃবিঃ ২৬৯ ধারায় ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিককে দোষী সাব্যস্থ করে ৫ হাজার টাকা এবং একই ধারায় গোয়ালপট্টি এলাকার ১টি দোকানীকে ১ হাজার টাকা ও রূপমার্কেটের ১টি ইলেট্রনিক্স দোকানীকে ১ হাজার টাকাসহ ৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। এসময় পৃথক পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে দণ্ডিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকগণ তাদের জরিমানার টাকা পরিশোধ করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ময়মনসিংহ সেনানিবাদের ৪ বীর এর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোফাজ্জল হোসেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের পেশকার হেলাল উদ্দিন, দুলাল মিয়া, সদর উপজেলা অফিসের সহকারি তহসিলদার মাসুমসহ সেনা সদস্য ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।