ভিজিএফ’র চাল তসরুফ, গোপনে বিক্রি ও পাচারকালে আটকের ঘটনাকে প্রতিপক্ষের মিথ্যে অপপ্রচার উল্লেখ করে এর প্রতিবাদে এবং বিরোধীদের হত্যার হুমকির প্রেক্ষিতে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।মঙ্গলবার (১০ মে) বেলা সাড়ে ১২ টায় নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে নিজ চেম্বারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরকার জুন, প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির ময়নুল, ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মহির উদ্দিন প্রমুখ।লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যান বলেন, আন্ত;জেলা কুখ্যাত মাদক সম্রাট মোনাফ আলী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিল। জনগণের ভোটে আমি বিজয়ী হওয়ায় তিনিসহ অন্যান্য প্রার্থীরা চরম বিরোধিতা করছেন। সকল কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। বিশেষ করে মোনাফ ও তার ছেলে মাহমুদ হাসান রকি যে মাদক, অস্ত্র, খুনসহ বিভিন্ন মামলার আসামী বিভিন্ন মিথ্যে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ মে নীলফামারী সদর এলাকায় চাল ধরা পড়া নিয়ে রকি ও তার দলবল আমাকে পরিবার, সমাজ ও প্রশাসনের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করতে ফেসবুকে মিথ্যে কথা বলে অপপ্রচার চালায়। চেয়ারম্যান বলেন, মূলতঃ পিকআপ ভর্তি যে চাল ধরা পড়েছে তা আমার বা পরিষদের কারও নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার ৫২১৩ টি ভিজিএফ কার্ডের বিপরীতে ৫২.১৩০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাই। যা ১০ কেজি হারে সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে বিতরণ করেছি। এর প্রেক্ষিতে তিনি প্রশ্ন তোলেন রকি কিভাবে জানে যে ওই চাল আমার? সে কি পুলিশ, সাংবাদিক না র্যাব? সে যদি আমার পরিবর্তে অন্য কোন প্রশাসনিক ব্যক্তি বা কোন নেতার নাম বলতো তাহলে কি সেটাই সত্য হতো? তাছাড়া চাল নাকী পোড়ারহাটে পিকআপে লোড করা হয়েছে। তাহলে সেখানে আটক না করে সুদূর নীলফামারীতে গিয়ে ধরার নাটক করা হলো কেন। আসলে এগুলো ষড়যন্ত্র। তিনি বলেন, রকি ও তার সাঙ্গপাঙ্গ গোলাম রাব্বানী, নয়ন শাহ, আব্দুল মতিন, সেলিম, মান্নান বলে বেড়াচ্ছে যে, বোতলাগাড়ী ইউনিয়নে আবারও নির্বাচন হবে। কারণ যিনি চেয়ারম্যান আছেন (আমি) তাকে ৬ মাসের মধ্যে হত্যা করা হবে। এ নিয়ে আমি ও আমার পরিবারের লোকজন প্রাণ সংশয়ে আছি। একারণে প্রশাসনের কাছে জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আবেদন করছি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান সরকার জুন বলেন, আটক পিকআপের চালককে চাপ দিয়ে আমার সহযোগী বিপুলের কথা বলানো হয়েছে। অথচ বিপুলের বাড়ি রকির বাড়ির সামনেই। বিপুলের বাড়িতে একদানা চালও পায়নি। হত্যার হুমকি দেয়া ও ফেসবুকে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা এখনও নেয়া হয়নি। পরিষদের ১২ জন সদস্যের মধ্যে মাত্র ২ জন বাদে সকলেই সংবাদ সম্মেলনে অনুপস্থিত কেন? এমন প্রশ্নের প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান বলেন, আমি কাউকেই জানায়নি। তাই তারা আসেনি। এ প্রসঙ্গে ২ নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. মমিনুর রহমান সরকার কাইল্ঠা বলেন, পরিষদগতভাবে এ ব্যাপারে কোন আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি। চেয়ারম্যান একান্ত ব্যক্তিগতভাবে এ আয়োজন করেছেন। অথচ বিষয়টি পরিষদগত ব্যাপার। তিনি বলেন, মূলতঃ আটক পিকআপ ভর্তি চাল পোড়ারহাটের পাইকার বিকাশ, কাশেম, উপেন্দ্রনাথ এর মাধ্যমে নীলফামারীর পরেশের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। এই পাইকারদের তদন্ত করলেই প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে। আমরাও চাই এই ঘটনার সঠিক বিচার হোক। কারণ কোন একজনের অপকর্মের দায় আমরা পুরো পরিষদ নিতে পারিনা। একইভাবে এলাকাবাসী অনেকেই মন্তব্য করেন যে, চাল চুরি, বিক্রি ও পাচারের ঘটনা থেকে রেহাই পেতে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপপ্রয়াস হিসেবে পুরো পরিষদ কে উপেক্ষা করে চেয়ারম্যান একক সিদ্ধান্তে এই সংবাদ সম্মেলন করেছেন। আদতে সত্য ধামাচাপা দেয়ার এই অপচেষ্টা কোনভাবেই সফল হবেনা। (ছবি আছে)