1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
যন্ত্রপাতি ধারালেও আনোয়ারের জীবনে এখন আর ধার নেই!
বাংলাদেশ । বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

যন্ত্রপাতি ধারালেও আনোয়ারের জীবনে এখন আর ধার নেই!

নজরুল ইসলাম :
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০২২
  • ৮৪৫ বার পড়েছে

ন শরীর। তবু জীবিকার টানে ছুটে চলেন গ্রাম থেকে শহরে। গ্রাম থেকে গ্রামে। সেই শৈশবে বাবার হাত ধরে কর্মকার পেশায় হাতেখড়ি। তারপর শিখে নেন শিল-পাটা ধার দেয়ার কাজ। সেই ৯ বছর থেকে ৭৫বছর বয়সে তাঁর চলছে বিরামহীন পাথর খুঁদায়ের কাজ।

আধুনিক সভ্যতায় মেশিনে তৈরি রান্নার উপকরণ হলুদ, মরিচ, জিরা, ধনিয়ার গুঁড়ো বাজারে পাওয়ায় এখন আর মহিলাদের শিল-পাটায় বেটে রান্না করার প্রয়োজন না। তাই কমে গেছে শিলপাটার চাহিদা। তবুও পুরাতন এই পেশাকে আঁকড়ে ধরে আছেন আনোয়ার মিয়া। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে দোষ দেই না। কারণ দোষ আমার ভাগ্যর! শুধু চাই, মরার আগে পর্যন্ত যেন কাজ করে যাওয়ার ক্ষমতা থাকে আমার।’

বয়সের ভারে ও পুষ্টিহীনতায় নতজানু আনোয়ার মিয়া। বয়স হয়েছে বলে এখন আর তেমন কাজ করতে পারেন না। দুইজন ছেলে থাকলেও তারা স্ত্রী-ছেলে মেয়ে নিয়ে আলাদা থাকেন। বয়সের কারণে প্রায় সময়ই নানান অসুখ-বিসুখ লেগে থাকে তাঁর। নিয়মিত ঔষধ খেতেই হয় তাঁকে। গতবছর তাঁর স্ত্রী মারা যাওয়ার কারণে তিনি আরও একা হয়ে পড়েছেন। সারাদিন পরিশ্রম করে যা জোটে বাজার করে সন্ধ্যায় নিজেই রান্না করেন। আবার পরের দিন কাজের উদ্দেশ্য বেরিয়ে যান বাড়ি থেকে।

তিনি জানান, ‘একটি শীল-পাটা ধার করে তাঁর ৩০-৪০ টাকা আয় হয়। সারাদিন মিলিয়ে ৫ থেকে ৬টি কাজ করতে পারেন। বয়স হয়েছে বলে আগের মতো আর কাজ করতে পারেন না। তবে ধান কাঁটার সিজনে কাঁচিতে ধার কেটে ভালো টাকা আয় করেন। তাঁর শ্বাস-কষ্ট থাকায় নিয়মিত ঔষধ খেতে হয়। তাই দিনের আয়ের একটি বড় অংশ চলে যায় ঔষধ কিনতেই। যখন কাজ করতে পারি না তখন ঔষধ না খেয়েই থাকি। কখনও কখনও কারো কাছে ধার দেনা করে ঔষধ কিনে নিয়ে আসি।’

উপজেলার খামার পাড়া এলাকায় দেখা গেল আনোয়ার মিয়ার নিপুর হাতে কাজ। শিলপাটায় ছেনি দিয়ে ছোট্ট একটি হাতুড়ির সাহায্যে ঠুকে ঠুকে ধার কাটানো দেখতে শিশুরা গোল হয়ে ঘিরে ধরে। সে কত স্বাভাবিক ভঙ্গিতে পাটার পাথরটি খোদায় করে চলে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সারা পাটার গা মাছের আঁশের মত রূপ ধারণ করে ফেলেন।

তিনি জানান, বয়ষ্কদের ভাতা দেওয়া হয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। তিনি সেখানে যোগাযোগও করেছেন। কারণ ভাতা পেলে নিয়মিত ঔষধ খাওয়ার টাকার ব্যবস্থা হবে তাঁর। কিন্তু সেখানে গিয়েই তিনি জানতে পারেন তাঁর ভোটার আইডিতে এখনও ভাতা পাওয়ার মতো বয়স হয়নি ! বয়ষ্ক ভাতা পেতে ৬৫ বছর বয়স হতে হয়। কিন্তু একটু ভুলের কারণে তাঁর বয়স এখনও ৫৭ বছর! ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জানানো হয় এটা সংশোধন করতে হবে। এটা করতে একটু সময় লাগবে। তিনি কয়েকদিন ঘুরে ঘুরে এখন আশা ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, ‘এ ভুল আমার না হলেও এখন দায় আমার। আসলে আমার ভাগ্যরই দোষ !’ ভাগ্যর উপর সব ছেড়ে দিলেও তিনি কাজ ছাড়তে পারছেন না। কারণ জীবন তো আর থেমে থাকবে না। জীবনের প্রয়োজনেই তিনি নিয়মিত ছুটে চলেন গ্রাম থেকে গ্রামে। ু

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD