পূর্ব বিরোধের জেরে পবিত্র শবে মেরাজের সন্ধ্যায় মসজিদের ভেতরে ঢুকে নামাজে সেজদারত যুবককে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। ন্যাক্কারজনক ও নৃশংস এ ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার নাজিরা বাজার এলাকার বাইতুর রহমান জামে মসজিদের ভেতরে। স্থানীয় এলাকাবাসী, মসজিদে মুসল্লী ও ভুক্তভোগীর ছোট ভাই রনী সহ পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে জানা যায়, নাজিরা বাজার এলাকার সেলিম মিয়ার ছেলে মাইক্রোবাস চালক সোলেমান মিয়া (২৯), নিয়মিত এই মসজিদে নামাজ আদায় করে। ২৮ফেব্রুয়ারী বাসা থেকে ইফতার শেষ করে মাগরীবের নামাজ পড়তে মসজিদ প্রবেশ করে।
জামাত শেষ হয়ে যাওয়ায় কয়েকজন মুসল্লী মসজিদে ছিলো তখন। সোলেমান মসজিদে প্রবেশ এর কয়েক মিনিট পর আগে থেকেই বাজারে ব্যাগ হাতে মসজিদের অদুরে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন যুবক মুখে মাস্ক লাগানো অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করে। বাজারের ব্যাগের ভেতর থেকে চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি ও সুইস গিয়ার (চাকু) বের করে নামাজরত সোলেমানকে লাথি দিয়ে ফেলে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। একের পর এক ধারালো অস্ত্রের কোপে মসজিদের কার্পেট রক্তাক্ত হয়ে ওঠে।
নিজের জীবন বাঁচাতে চিৎকার দিলে ঘারে পাড়া দিয়ে আরো কয়েকটি আঘাতের পর মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে দ্রুত মসজিদ থেকে বেড়িয়ে মটর সাইকেল নিয়ে স্থান ত্যাগ করে। চিৎকার শুনে পাশের সড়কে চলাচলকারিরা ছুটে এসে দ্রুত পুলিশ কে খবর দেয়। পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা আশংকাজনক অবস্থায় প্রথমে ময়নামতি জেনারেল হাসপাতাল থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। গুরুতর আহত সোলেমান বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক এসআই হাসান সহ ঘটনাস্থলে আসে দেবপুর ফাঁড়ি পুলিশের একটি টিম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় পেশায় গাড়ি চালক সোলেমান দীর্ঘদিন ধরেই পুলিশ সহ প্রশাসনের সোর্স হিসেবে কাজ করে। ঘটনার সাথে জড়িতদের কয়েকজন প্বার্শবর্তী এলাকার এবং সোলেমানের পূর্ব পরিচিত। যাদের কয়েকজন মাদক সহ বিভিন্ন মামলার আসামী। পূর্ব বিরোধের জেরই তাকে হত্যার চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা। হাসপাতালে অবস্থানকারী সোলেমানের স্বজনরা জানায়, ধারালো ও ভারী অস্ত্র দিয়ে পিঠে হাত পা সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কোপানো হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে অজ্ঞা হারিয়েছে। তার শরীরে রক্ত দেয়া হচ্ছে। অবস্থা আশংকাজনক।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় দেবপুর ফাঁড়ি পুলিশের আইসি সহ পুলিশের একটি টিম। ঘটনার সাথে জড়িতদের কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। ঘটনার সঠিক তদন্ত ও আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।