1. bpdemon@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
  2. ratulmizan085@gmail.com : Daily Kaljoyi : Daily Kaljoyi
রূপগঞ্জে ফুলের রাজ্যে অমিক্রনের হানা, হাসি নেই চাষিদের মুখে
বাংলাদেশ । বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

রূপগঞ্জে ফুলের রাজ্যে অমিক্রনের হানা, হাসি নেই চাষিদের মুখে

নজরুল ইসলাম :
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ৫৯৫ বার পড়েছে

ফুলকে ভাল বাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। ফুল ভালবাসার প্রতীক। ভাষার মাস , ভালাবাসার মাস ফেব্রুয়ারী। এছাড়াও বিভিন্ন দিবসে ফুলের ব্যবহার হয়ে থাকে। মূলত এ মাসকে কেন্দ্র করেই ফুল চাষিরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু বিগত ২ বছর ধরে করোনা মহামারীর কারণে আচার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় ফুল চাষিদের ব্যবসা নেই বললেই চলে। ২১ সালের মাঝামাঝি করোনার দাপট কিছুটা কমলেও নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের কারণে ফুল চাষিদের কপালে আবার দুঃচিন্তার ভাঁজ পড়েছে। ফুলের রাজ্যে ওমিক্রনের হানার দিশেহারা কৃষক।

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার রূপগঞ্জ সদর, ভুলতা ও গোলাকান্দাইল ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকায় হাজার হাজার একর জমিতে বছরজুড়ে উৎপাদন হচ্ছে দেশি-বিদেশি নানা জাতের ফুল। চারদিক ফুলে ফুলে রঙিন। পথের দুই ধারে গোলাপ, রজনীগন্ধা, গ্ল্যাডিওলাস, গাঁদা ও জারবেরা ফুলের ক্ষেত। লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি আর সাদা রঙের এক বিস্তীর্ণ বিছানা যেন বিছিয়ে রেখেছে।

এমন দৃশ্যে সবারই চোখ-হৃদয় জুড়িয়ে যায়। দেশে উৎপাদিত ফুলের ২৫ ভাগ যোগান হয় এখান থেকে। ফুল চাষে কৃষকদের ব্যস্ততার শেষ নেই। কেউ ফুল কেটে স্থানীয় বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। সেখান থেকেই ফুল যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে। ফুলের ভরা মৌসুমে চাষিদের মুখে হাসির পাশাপাশি করোনার নতুন প্রজাতি ওমিক্রনে চিন্তা পিছু ছাড়ছে না। করোনায় টানা দুই বছরের মন্দাভাব কাটাতে গত কয়েক মাস ধরে পরিশ্রম করছেন ফুলচাষিরা। রাজন বাবু নামে এক চাষি জানান, প্রায় চার মাসের পরিচর্যায় বর্তমানে দেড় বিঘা জমিতে গোলাপ, ১২ কাটা জমিতে জারবেরা ও দেড় বিঘা জমিতে গাঁদা ফুলে ফুলে ভরে গেছে।

ফুল চাষিদের অপেক্ষা পয়লা ফাল্গুন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস এবং স্বাধীনতা দিবস। এসব দিবসে ফুল বিক্রি করে গত দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চান চাষিরা। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর মুখে হঠাৎ ওমিক্রন চিন্তার ভাজ ফেলেছে তাদের কপালে। ইতোমধ্যে বিধিনিষেধে সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় কমছে ফুলের দাম। এমন পরিস্থিতিতে সামনের দিবসগুলোতে ফুল বিক্রি নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন প্রায় সব চাষি।

ফুল চাষি সাজ্জাদ জানান, গত দুই বছর করোনায় ফুল বিক্রি করতে না পেরে তিনি নিঃস্ব হওয়ার পথে ছিলেন। কেউ আবার ফুল ছেড়ে অন্য ফসলের আবাদ শুরু করেছে। করোনার প্রকোপ কিছুটা কমায় গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে ঋণ নিয়ে নতুন করে শুরু করেন ফুলের চাষ। কিন্তু ৪ মাস পরিশ্রমের পর ফুলের ভরা মৌসুমে এসে নতুন ওমিক্রন বেচাকেনায় সংশয়ে ঠেলে দিয়েছে।

বাজারে কৃষক ও স্থানীয় পাইকার ব্যবসায়ী সুমন হোসেন জানান, বর্তমানে ফুলের বাজার খারাপ। লকডাউন না দিলেও করোনা আতঙ্কে ফুল বেচাকেনা কম। বর্তমানে প্রতি হাজার গাঁদা ফুলের দাম ২০০ টাকা। নতুন বছরের শুরুতে দাম ছিল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। চার থেকে ছয় টাকা দামের একেকটি গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ২ টাকায়। প্রতিটি রজনীগন্ধা ৭ থেকে ১০ টাকার বদলে সাড়ে ৫ থেকে ৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রায় ১৫ টাকার রঙিন গ্লাডিউলাস প্রতিটির দাম এখন ৬ থেকে ৯ টাকা। জারবেরা দামও প্রায় অর্ধেক নেমে হয়েছে ৮টাকা। ফুল বাঁধার জন্য কামিনীর পাতার আঁটি ৫০ থেকে ৬০ টাকার জায়গায় বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। জিপসির আঁটি ৪৫ টাকা থেকে কমে এখন ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ফুল ব্যবসায়ী সুভন বলেন, ফুলের ব্যবসা মূলত অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক। গত দুই বছর লকডাউনে ফুল বিক্রি করতে না পেরে নিঃস্ব হতে বসেছিল চাষিরা। কেউ আবার ফুলের চাষ ছেড়ে অন্য ফসলের আবাদ শুরু করেছিলেন। করোনার প্রকোপ কিছুটা কমায় ঘরে দাঁড়াতে ঋণ নিয়ে নতুন করে শুরু করে ফুলের আবার ওমিক্রনে চোখে অন্ধকার দেখছেন।রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেহা নুর জানান, চলতি বছর রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ৬৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুল চাষ হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ক্ষতি পুষিয়ে লাভবান হবেন ফুল চাষিরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

Archive Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
প্রকাশক কর্তৃক জেম প্রিন্টিং এন্ড পাবলিকেশন্স, ৩৭৪/৩ ঝাউতলা থেকে প্রকাশিত এবং মুদ্রিত।
প্রযুক্তি সহায়তায় Hi-Tech IT BD