আজ সোমবার ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২ খ্রীষ্টাব্দ। আজ ইশারা ভাষা দিবস। আজকের এই দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়, “ বাংলা ইশারা ভাষার প্রসার, শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার।” আমাদের এই বৈচিত্রময় পৃথিবীতে রহস্যের অন্তনেই। সৃষ্টির রহস্য এখনও আবিষ্কৃত হয়নি।
বিজ্ঞানীর গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে চষে বেড়াচ্ছেন। বিজ্ঞান এখনও পৃথিবীর অনেক অজানা রহস্য আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়নি। স্রষ্টা নিজেই বলেছেন, “ আমি যা চিন্তা করি তাই সৃষ্টি করি, যেভাবে ইচ্ছা করি সেভাবেই সৃষ্টি করি, আমাকে ছাড়া তোমরা কিছুই করিতে পার না।” স্প্রতিবন্ধী মানুষও তাঁর সৃষ্টি। এটা তাঁর ইচ্ছার প্রতিফলন। প্রতিবন্ধীতা মানুষের বৈচিত্রের আর একটি রূপ।
প্রতিবন্ধীতাও দিতে পারে মানুষের জীবনের পরিপূর্ণ রূপ। প্রতিবন্ধী শিশুদের পক্ষের লড়াকু সৈনিক কিংবদন্তি হেলেন কেলার বলেন, “অন্ধত্ব নয়, অজ্ঞতা ও অনুভূতিহীনতা্ দুনিয়ার একমাত্র দুর্ভেদ্য অন্ধকার।” সেই অন্ধকারের এক প্রতিনিধি আজকের এই আলোর জগতে এসে দৃষ্টান্তমূলক কিছু স্মৃতি রেখে গেছেন অজ্ঞতা ও অন্ধত্ব দূর করে যেন আমরা নিজেরা আলোকিত হয়ে আলো ছড়াতে পারি। আমরা যেন ভাবতে পারি প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়, তারা প্রতিভাবন্ধীনয়।
সমাজে মানুষ হিসেবে বাঁচার তাদেরও অধিকার রয়েছে। আজকের এই দিনে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী স্বণামধন্য চিত্রশিল্পী ও লেখকের জন্মদিন। ভারতীয় শিল্পী বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় ১৯০৪ খ্রীষ্টাব্দের ৭ ফেব্রুয়ারী কলকাতার বেহালায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা বিপিন বিহারী মুখোপাধ্যায়। মাতা অপর্ণা।
তাঁর পাঁর ভাই ও এক মাত্র বোন শৈল। তাঁর ভাই ব্রজবিহারী (বড়দা), বিমানবিহারী (ছোড়দা), বনবিহারী (মেজদা), বঙ্কুবিহারী (সেজদা), বিজনবিহারী ( ন’দা)। তিনি ছিলেন সবার ছোট। চোখের সমস্যা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এক চোখে ক্ষীণ দেখতে পেতেন। তাঁর প্রতিবন্ধীতা তাঁকে পিছনে ফেরাতে পারেনি।
তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। ১৯৮০ খ্রীষ্টাব্দের ১১ নভেম্বর ৭৬ বছর বয়সে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে এক দূর অজানায় পাড়ি জমান। অন্ধত্ব যাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি, অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে তাঁর চারপাশের প্রকৃতি, প্রান্তর, প্রাণী, মানুষের বৈশিষ্ট্যগুলো প্রজ্ঞার সাথে বিরল আন্তরিকতার ছোঁয়ায় ভারতীয় আধুনিক চিত্রকলার সূচনা করেছিলেন তাঁর চিত্রকর্মের মধ্যদিয়ে।