চাঁদপুরের কচুয়ায় জনপ্রিয় হচ্ছে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ। চলতি মৌসুমে কচুয়ায় ৫০ একর জমিতে এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করা হচ্ছে। উপজেলার পনশাহী গ্রামে এই পদ্ধতিতে ধান চাষ করা হয়। এতে শ্রমিক সংকট দূর হবে। ধান চাষে খরচ কমে আসবে। এ পদ্ধতির মাধ্যমে চারা রোপণ করার জন্য ট্রে-তে বীজতলা করা হয়েছে, রোপণ করা হয়েছে রাইস ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রতিনিয়ত কমছে কৃষি শ্রমিক। নতুন এ পদ্ধতিতে বীজতলা থেকে ফসল কাটা পর্যন্ত, সবই এক সময়ে একযোগে করা হবে। স্বল্প মানুষের সাহায্যে কাজটা করবে যন্ত্র। জমির অপচয় রোধে এ পদ্ধতিতে প্রচলিত রীতিতে বীজতলা তৈরি না করে প্লাস্টিকের ফ্রেম বা ট্রেতে লাগানো হয় ধানের বীজ। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে চারা হবে। তারপর রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করা হবে। একটা ট্রান্সপ্ল্যান্টার এক ঘণ্টায় এক একর জমিতে চারা লাগাতে পারে, বেঁচে যায় শ্রমিকের খরচ। একই সময় রোপণ করায় নির্দিষ্ট এলাকায় সব ধান পাকেও একই সময়। মেশিন দিয়ে একই সঙ্গে সব ধান কাটা ও মাড়াই করা যাবে।
পনশাহী গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা নাজিম উদ্দিন ও শাহ আলম বলেন, কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এটিকে কাজে না লাগালে ব্যয় বাড়বে। কৃষক কৃষি বিমূখ হয়ে পড়বেন। মেশিনের সাহায্যে ধান লাগানোর কারণে কৃষকের খরচ কম লাগছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম লিটন বলেন, সরকার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে তিন হাজার ২০০ কোটি টাকার ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পটি ২০২০-২৫ সাল মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে।
কৃষিকে লাভজনক ও বাণিজ্যিকীকরণে সরকার বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। প্রকল্প মেয়াদে আগামী পাঁচ বছরে ৫৭ হাজার কৃষিযন্ত্র কৃষকদের ভর্তুকি মূল্যে দেওয়া হবে। হাওর এলাকায় ৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে এবং হাওর ছাড়া অন্যান্য এলাকায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকিতে বিভিন্ন প্রকার কৃষিযন্ত্র ক্রয় করতে পারবে কৃষকরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সোফায়েল হোসেন বলেন, প্রতি একর জমিতে ধান লাগাতে ১২-১৫ হাজার টাকা শ্রমিকের মজুরি দিতে হয়। সেখানে মেশিনে ধান লাগালে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচ হবে। সময়ও কম লাগবে। কাটতে সময় এবং খরচ কম লাগবে। তাই এখানে দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে সমলয় পদ্ধতিতে বোরো ধান চাষ।